পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পুনর্গঠিত হওয়ার পর পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদীহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কমিশন। উদ্যোগ নিয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ এবং এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার।
বিএসইসির সূত্র মতে,৩০ শতাংশ ধারণের সময় শেষ হচ্ছে আগামী ২৭ অক্টোবর। এই সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলোর পরিচালকরা নির্দেশনাটি পরিপালন না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারী দিয়েছে কমিশন। ইতোমধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের সময় শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ২% শেয়ার ধারণ না করায় পদ হারিয়েছে ১৭ পরিচালক। ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করলে কঠিন অবস্থানে যাবে বিএসইসি। ইতোমধ্যে ৩০% শেয়ার ধারণ নিয়ে বিএসইসি আল্টিমেটাম দিয়েছে।
বিএসইসির সূত্র মতে, ইতোমধ্যে তালিকাভুক্ত তিনটি কোম্পানির পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত নির্দেশনা পরিপালন করেছে। বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালন করা তিনটি কোম্পানি হলো বিডি থাই,বিজিআইসি এবং এমারেল্ড অয়েল লিমিটেড।
বিএসইসি সূত্র মতে, এখনো ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনে ব্যর্থ রয়েছে পুঁজিবাজারের ৪১ কোম্পানি। এগুলো হচ্ছে- একটিভ ফাইন কেমিক্যাল, আফতাব অটোমোবাইলস, অগ্নি সিস্টেমস, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, এপেক্স ফুটওয়্যার, এ্যাপোলো ইস্পাত, বারাকা পাওয়ার, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, সিটি ব্যাংক, ডেল্টা স্পিনার্স, ফ্যামিলিটেক্স, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফাইন ফুডস, ফু-ওয়াং সিরামিক, ফু-ওয়াং ফুডস, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস, ইমাম বাটন, ইনটেক, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলস, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেট্রো স্পিনিং, মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইং, নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং, নর্দার্ণ ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, ফার্মা এইডস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, সালভো কেমিক্যাল, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সাউথইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, তাল্লু স্পিনিং, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, বেক্সিমকো, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কে অ্যান্ড কিউ।
উল্লেখ,২০০৯-১০ সালে শেয়ার কারসাজির পর ভয়াবহ দরপতনের প্রেক্ষাপটে ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে ও সম্মিলিতভাবে নূন্যতম শেয়ার ধারণের শর্ত আরোপ করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল, কোম্পানি পরিচালনায় জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে যথাযথ প্রতিনিধিত্বশীল পর্ষদ গঠন করা।
ওই নির্দেশনায় পরিচালক পদে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এককভাবে কমপক্ষে সংশ্নিষ্ট কোম্পানির ২ শতাংশ শেয়ার থাকার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিল বিএসইসি। এ ছাড়া কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকার শর্ত দেয়। গত আট বছরে অনেক পরিচালক ও কোম্পানি এ শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
এ নির্দেশনা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরই ৪ কোম্পানির ১৪ জন পরিচালক আদালতে রিট করেন। আর শেষ পর্যন্ত পরিচালকদের রিট খারিজ করে বিএসইসির সিদ্ধান্ত বহাল রাখে আদালত।