বিশ্ব ব্যাংকের ‘ডুয়িং বিজনেস’ সূচকে আগামী বছর বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম ৯৯ দেশের মধ্যে নিয়ে আসতে কাজ করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এবার আমাদের অবস্থান ১৬৮তম। এবার আমরা আগের চেয়ে আট ধাপ এগিয়েছি। আগে কখনো এত পয়েন্ট জাম্প আমরা করতে পারিনি।
এই অগ্রগতির জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আট ধাপ এগিয়ে এলেও আমরা মনে করব না এটা আমাদের অনেক বড় অর্জন। আমাদের লক্ষ্য আগামী বছর আমরা উল্লেখযোগ্য একটা অগ্রগতি চাই। আমরা টার্গেট করব যেন ডাবল ডিজিটে আসতে পারি।”
বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ‘ডুয়িং বিজনেস’ সূচকে গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭৬ নম্বরে। আট ধাপ এগিয়ে এবার বাংলাদেশ উঠে এসেছে ১৯০ দেশের মধ্যে ১৬৮ নম্বরে।
একটি দেশের অর্থ-বাণিজ্যের পরিবেশ দশটি মাপকাঠিতে তুলনা করে এই সূচক তৈরি করা হয়। এই দশটি মাপকাঠি হল- নতুন ব্যবসা শুরু করা, অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি পাওয়া, বিদ্যুৎ সুবিধা, সম্পত্তির নিবন্ধন, ঋণ পাওয়ার সুযোগ, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর পরিশোধ, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তি বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন।
সব মিলিয়ে ১০০ ভিত্তিক এই সূচকে বাংলাদেশের মোট স্কোর হয়েছে এবার ৪৫, যা গতবছর ৪১ দশমিক ৯৭ ছিল।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, দশ মাপকাঠির মধ্যে ছয়টিতেই বাংলাদেশের স্কোর গতবারের চেয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে ঋণ পাওয়ার সুযোগে স্কোর বেড়েছে ২০ শতাংশ পয়েন্ট। চারটি মাপকাঠিতে এবারের স্কোর গতবারের সমান। শুধু অবনতি হয়েছে দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে।
এবারের সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি ঘটানো ২০ দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও ব্যবসার পরিবেশে দক্ষিণ এশিয়ায় আফগানিস্তান ছাড়া সবার চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে।
সালমান এফ রহমান বলেন, “গত ৩/৪ বছর ধরেই এ নিয়ে কাজ হচ্ছিল। কিন্তু আমাদের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হচ্ছিল না। নিয়মটা হল, এপ্রিল মাসের মধ্যে প্রতি বছরের যা রিফর্মস হয়, সেই রিফর্মসের উপর ভিত্তি করে তারা অক্টোবরে ফলাফল দেয়।
“দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বিশ্ব ব্যাংক যখন র্যাংকিং শুরু করে, বাংলাদেশ খারাপ অবস্থানে ছিল। সর্বশেষ আমাদের অবস্থান ছিল ১৭৬তম। তার আগে আরও খারাপ ছিল।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আপনি যদি প্রতিবেদনটা দেখেন, ১০টা মানদণ্ডের মধ্যে অন্তত ৬০টি ইস্যুতে রিপোর্ট করতে হয়। প্রতিটাকেই কিন্তু গুরুত্ব দিতে হবে। সবগুলো ক্ষেত্রেই আমাদের উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে।”
সবাই মিলে আন্তরিকভাবে কাজ করে গেলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, বিডা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস