দেশের প্রধান পুঁজিবাজা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সদস্য ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ কোনো ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে ঝুলছে তালা।
গ্রাহকদের বিভিন্ন সময়ে চেক দিলেও ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর তার ক্যাশ করা যাচ্ছে না। করোনার এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে গ্রাহকরা। দীর্ঘদিন মন্ধা থাকা পুঁজিবাজারে আবারে নেতিবাচক খবর। এতে করে আস্থা হারাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদ উল্লাহসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্নসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।
এদিকে অফিস বন্ধ পেয়ে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদ উল্লাহর ধানমন্ডি ৫ নাম্বারের বাসায় যান কয়েক জন বিনিয়োগকারী। কিন্তু বাসায় গিয়ে তারা কাউকে পাননি। আর ওই বাসায় কোনো আসবাবপত্র ছিল না, সম্পূর্ণ বাসা খালি ছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
এদিকে অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পান বিনিয়োগকারীরা। পরে প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কেউ কেউ ডিজঅনার চেক হাতে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় কিছু বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে সর্বশান্ত হওয়ার আশঙ্কায় হাউজটিতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ বিষয়ে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদ উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার অফিসে যাওয়ার পর মূল শাখায় যোগাযোগ করা হলে জানতে পারি, এমডি অফিসে আসেননি। এরপর ডিএমডি’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমডি’র মোবাইল বন্ধ সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। পরে চেয়ারম্যান ও কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাই আমরা অফিস বন্ধ রেখেছি।
এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক বলেন, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানতে পেরেছি। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন বন্ধ রাখা রয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ডিপি স্থগিত রাখার জন্য সিডিবিএলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযোগের সত্যতা যাচাই-বাছাইকে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের শাখা রয়েছে মোট ৩টি। তাদের প্রধান শাখা ৫৭, পুরানা পল্টন (৩য় তলা) মতিঝিল, টাকায়, দ্বিতীয় শাখা: ৩৮ জনসন রোড (রাইসাহেব বাজার), ঢাকায় এবং তৃতীয় শাখা: কে. আর কমপ্লেক্স (২য় তলা), ক-০৮ লিংক রোড, ঢাকায় অবস্থিত।