পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণের জন্য গঠিত সরকারের একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম)। প্রতিষ্ঠানটির সুন্দর অবকাঠামো থাকলেও ব্যবহার করার মতো লোক নেই। এমন পরিস্থিতিতে গত ৩ আগস্ট বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মেধাবী অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার। দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই প্রতিষ্ঠানটিকে গোছাতে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। একাধিকবার স্বর্ণপদক পাওয়া এই মেধাবী মানুষটির স্বপ্ন বিআইসিএমকে একটি বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়া। তার মতে প্রতিষ্ঠানটির সকল অবকাঠামো আছে; সরকারের আন্তরিকতারও কোন ঘাটতি নেই। প্রয়োজন উদ্যোগ নেওয়া এবং তা বাস্তবায়নে সকলকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা ও আগামীর পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল সানবিডির সাথে। তার স্বপ্নের কথা তুলে ধরেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক শাহ মো. সাইফুল ইসলাম।
অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার বলেন, সরকারের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তীব্র চাওয়া হলো বিআইসিএম একটি ভালো মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠুক। যোগদানের পর সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে আমি এই আশ্বাস পেয়েছি। বিষয়টি আমাকে নাড়া দিয়েছে। আমিও তাদের চাওয়া অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে সাজাতে চাই। বানাতে চাই বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হলো বেসরকারি খাত। আর এই খাতকে চাঙ্গা করতে সহযোগিতা করে পুঁজিবাজার। একটি ভালো পুঁজিবাজারের জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষিত বিনিয়োগকারী। প্রশিক্ষিত বিনিয়োগকারী তৈরি করার জন্য সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম)।
মাহমুদা আক্তার বলেন, বিনিয়োগকারীরা যাতে অন্যের প্ররোচনায় বিনিয়োগ না করে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কত সহজ করে বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়; আমরা সেই ধরণের মডিউল নিয়ে কাজ করছি। আমরা বিশ্বাস করি ভালো বা প্রশিক্ষিত বিনিয়োগকারীরাই হলো পুঁজিবাজারের প্রাণ। তাদেরকে ভালভাবে নার্সিং করতে পারলে আমরা একটি ভালো পুঁজিবাজার পাবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে অনেক মধ্যস্ততাকারী প্রতিষ্ঠান আছে। এখানে অনেক লোক চাকুরি করে। এই লোকগুলোই বিনিয়োগকারীদের সাথে সরাসরি কাজ করে। আমরা তাদেরকে সঠিকভাবে তৈরি করতে চাই। তাদেরকে সঠিকভাবে তৈরি করতে পারলে; তারা বিনিয়োগকারীদের বুঝাবে। এক পর্যায়ে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের শিল্পায়নে কাজ করবে। চাপ কমবে ব্যাংকের উপর। এই জায়গাটায়ও আমি কাজ করতে চাই।
মাহমুদা আক্তার বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী বাড়াতে হলে আস্থা বাড়ানোর বিকল্প নেই। এর জন্য বেশি বেশি প্রশিক্ষণ দিতে হবে। করোনার কারণে মানুষের তথ্য প্রযুক্তির প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সারা দেশের সকল বিনিয়োগকারীকে অনলাইন প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে চাই। এর ফলে একদিকে যেমন খরচ কমবে সময়ও বাচবে।
আগামীর পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে পুঁজিবাজার আছে; কিন্তু প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো প্রতিষ্ঠান নেই। আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সেসব দেশকে যুক্ত করতে চাই।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি (অ্যাপিলিয়েশন) নিয়ে খুব শিগগির আমরা মাস্টার্স কোর্স চালু করতে চাই। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপিলিয়েশনের জন্য কাজ করছি। মাস্টার্স পোগ্রামটা হবে ক্যাপিটাল মার্কেট রিলেটেড। এর জন্য একটি আউট লাইন ডিজাইন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পরপরই আমরা এই কাজ শুরু করবো।