বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গরিব লাখ লাখ শিশুকে পরিবারের খরচ জোগাতে লেখাপড়া ছেড়ে কাজে নামতে হয়েছে, বেড়েছে শিশুশ্রম। দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় এই শিশুদের চিরদিনের জন্য ঝরে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আয় কমে যাওয়া পরিবারের খরচ মেটাতে দরিদ্র শ্রমজীবী মা-বাবার পাশাপাশি রোজগারে নামতে বাধ্য হওয়া এসব শিশুকে বেশির ভাগ সময় অত্যন্ত কষ্টসাধ্য কাজ করতে হয়। কোথাও কোথাও তারা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করে।
এমনকি কখনো কখনো তাদের অত্যন্ত বিপজ্জনক কাজও করতে দেখা যায়। অথচ বিশ্বের প্রায় সব দেশে শিশুশ্রম অবৈধ। মহামারির মধ্যে দরিদ্র এসব শিশুর দিন কিভাবে কাটছে তা নিয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারির মধ্যে স্কুল বন্ধ, পরিবারের আয়ও কমে গেছে। তাই অনেক শিশুই ইটভাটায় বা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। সেখানে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের মতো ভারী ওজনের মালপত্র বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হচ্ছে। কেউ কেউ ময়লা পরিষ্কারের কাজ করছে, মেয়ে শিশুরা যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক শিশু খনিতে, বিড়ি, সিগারেট বা আতশবাজি তৈরির কারখানায় নোংরা পরিবেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দরিদ্র পরিবারগুলোতে অভাব-অনটন বাড়ছে। ফলে ওই সব পরিবারের শিশুদের স্কুলে ফেরার সম্ভাবনাও দিন দিন কমছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে প্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ শিশু স্কুল থেকে ঝরে যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক দশক ধরে বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোতে দারিদ্র্য কমতে শুরু করেছিল, যার ফলে বেশির ভাগ শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছিল।
সরকার থেকেও শিশুদের স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করতে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা এবং স্কুলে শিশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কভিড-১৯ মহামারির ধাক্কায় দেশগুলোর অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। তাদের উন্নয়নের গতি হ্রাস পেয়েছে বা পিছিয়ে গেছে।
সানবিডি/এনজে/৯:১০/২৯.০৯.২০২০