বিশ্বব্যাপী চলমান করোনাভাইরেস প্রভাব পড়েছে সব খাতে। এর বাহিরে নেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। ফলে নিজেদের রক্ষা করার জন্য ঋণ বিতরণ কমিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এর থেকে বের হতে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সরকার। এতে আস্থা পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। করোনার প্রভাব মোকাবেলায় কুটির, ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের জন্য প্রণোদনার ঋণ বিতরণ না করায় ২৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একইসঙ্গে স্বল্প পরিমাণে ঋণ বিতরণের দায়ে ২৫টি ব্যাংককে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সংশ্লিস্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বরাদ্দ অনুযায়ী প্রণোদনার শতভাগ ঋণ বিতরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করে দেয়া হয় চিঠিতে।
সূত্র জানায়, ১৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দুটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, একটি সরকারি ব্যাংক ও ৫টি বিদেশি ব্যাংককে কারণ দর্শানোর এ নোটিশ দেয়া হয়। সতর্ক করা হয়েছে ২৫ ব্যাংককে। এর মধ্যে সরকারি খাতের ৫টি ও বেসরকারি খাতের ২০টি ব্যাংক। এ খাতে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান নেই।
করোনার প্রভাব মোকাবেলায় ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প খাতকে সহায়তা করতে গত এপ্রিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে।
এ তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের ৪ শতাংশ সুদে চলতি মূলধনের জোগান দেয়ার কথা। সুদের বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে। এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে।
অর্থাৎ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ তহবিল থেকে যে পরিমাণ ঋণ দেবে তার বিপরীতে ৫০ শতাংশ পুনঃঅর্থায়ন করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া প্রথমে প্রণীত নীতিমালা দফায় দফায় সংশোধনের মাধ্যমে শিথিল করেছে।
এরপরও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ করছে না। ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কুটির, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ।
তারা ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নেই। ফলে তাদেরকে ঋণ বিতরণ করলে আদায় করা কঠিন হবে। এতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যেতে পারে। যে কারণে এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঝুঁকি নিচ্ছে না।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ বাড়াতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম হাতে নিয়েছে। অর্থাৎ কিছু ঋণের গ্যারান্টি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপরও ঋণ বিতরণ বাড়ছে না।