রাজধানীর মিরপুর রোডে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী ও হকারদের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুই ঘণ্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলার সময় ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে কয়েকটি দোকান এবং রাস্তায় কয়েকটি যান ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।
ব্যবসায়ীরা এই ঘটনার জন্য ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে। অন্যদিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেছেন, ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রম নেই। কেউ ছাত্রলীগের নাম ভাঙাতে চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের শাড়িমেলার কর্মচারী হাবিবুর রহমানের ভাষ্য, বিকেল তিনটার দিকে দুই যুবকসহ চারজন তাঁর দোকানে বিয়ের শাড়ি কিনতে আসেন। এক কর্মচারী শাড়ি প্যাকেট করে দিলে ক্রেতারা দাম না দিয়ে চলে যেতে উদ্যত হন। এ সময় বাধা দিলে যুবকেরা বলেন, ‘আমরা ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের নেতা, আমরা ঢাকা চালাই। এর ফল পাবি।’ পরে তাঁরা চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, যুবকেরা চলে যাওয়ার আধঘণ্টা পর বিকেল পৌনে চারটার দিকে ৩০-৩৫ যুবক লাঠিসোঁটা, রড, চাপাতি ও রামদা নিয়ে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে ঢুকে পড়েন। এ সময় মার্কেটের বাইরে অবস্থান নেন শতাধিক যুবক। তাঁরা একে একে দোকানের বৈদ্যুতিক বাতি ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেন। কয়েকজন শাড়িমেলায় ঢুকে দোকানের মালিক মিজানুর রহমান ও তার কর্মচারীদের পেটান। দোকান কর্মচারী হাবিবুর রহমান দাবি করেন, ওই যুবকেরা তাঁদের দোকান ভাঙচুরের পর দোকানের সব শাড়ি লুটে নেন। পরে মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা প্রতিরোধ করতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় অন্তত ১৫ জন আহত হন।
হামলাকারীরা পরে ওই মার্কেটের সামনে ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকান লুট করতে গেলে তাদের সঙ্গেও সংঘর্ষ বাধে। এ নিয়ে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ সময় একপক্ষ অপর পক্ষের ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আরও অন্তত ১৫ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে রাস্তার পাশে থাকা চারটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে রাস্তা খুলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. জসীমউদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে হয়েছে।