বড়দিন বা ক্রিসমাস উপলক্ষে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলি। এসব গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে বেশ কয়েকটি মুসলমান দেশে ক্রিসমাস উৎসব পালন করা নিষিদ্ধ। অথচ এই নিষেধাজ্ঞা ক্রিস্টানদের জন্য নয়, এটি কেবল অতি উৎসাহী মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে ওই সব দেশের সরকারগুলি।
খ্রিষ্টধর্মে ক্রিসমাস বা বড়দিন হল যিশুর জন্মোৎসব। খ্রিষ্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এইদিন কুমারী মেরির গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন যীশু। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খ্রিস্টানরা মহাসমারোহে দিনটি পালন করে থাকে। চলতি সপ্তাহে ব্রুনেইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ দেশটিতে মুসলমানদের জন্য ক্রিসমাস পালন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কোনো মুসলমান নাগরিক বড়দিন পালন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের ঘোষণা দেওয়া হয়। বড়দিন উৎসবের জন্য কোনো শুভেচ্ছা পাঠানো বা সান্তাক্লজের পোশাক পরাও নিষিদ্ধের মধ্যে পড়বে বলেও জানানো হয়। বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান অনলাইন জানিয়েছে, তাজিকিস্তানে চলতি বছর ক্রিসমাস উদযাপনে আরো কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির সরকার।
তাজিকিস্তান মুসলিম প্রধান হলেও দেশটিতে যে কোনো ধর্মীয় উৎসব পালনেই সরকারি বিধিনিষেধ রয়েছে। তাই এটি তাজিকিস্তানের জন্য নতুন কিছু নয়। বুধবার গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, সিএনএনসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে ‘সোমালিয়াতেও ক্রিসমাস পালনে নিষেধাজ্ঞা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। তবে বিস্তারিত সংবাদে দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, প্রথমত সোমালিয়ায় পুরোপুরি মুসলমান অধ্যুষিত ও এখানে কোনো খ্রিস্টান সম্প্রদায় নেই। দ্বিতীয়ত, জঙ্গি গোষ্ঠী আল-শাবাবের হামলা এড়াতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দেশটির ধর্ম বিষক মন্ত্রণালয়ের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ খেইরু বলেন, ‘আমরা ক্রিসমাস উৎসব পালনে সতর্কতা জারি করছি, যেটি কেবল খ্রিস্টানদেরই উৎসব। এটা পুরোপুরি বিশ্বাসের ব্যাপার। ক্রিসমাসের ছুটি ও এর ড্রামসের বাজনার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।’
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলিতে বড় শিরোনামে তিনটি মুসলমান দেশে ক্রিসমাস উৎসব পালনে নিষেধাজ্ঞার সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ ক্রিসমাস কেবলই খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব। এর সাথে মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই। চলতি বছর বেশ কয়েকটি পশ্চিমা চরমপন্থি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেসব দেশের ডানপন্থিরা মুসলিম বিদ্বেস উস্কে দিচ্ছে। গণমাধ্যমগুলির এ ধরণের সংবাদ প্রকাশ ওই বিদ্বেষকে আরো উস্কে দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।