বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে সোমবার থেকে পাঁচ দিনের জন্য সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারেও সব বার, ক্লাব, রেস্তোরা, হোটেল ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
তবে থার্টি ফাস্ট নাইটকে ঘিরে পর্যটন কক্সবাজার শহরে শতাধিক হোটেল ও বাড়িতে ডিজে পাটি জুড়ের আয়োজন চলছে। এসব পার্টিতে এসএমএস ও ফেসবুকের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে তরুণ-তরুণীদের। বিশেষ করে কলেজ-ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীদের।
পার্টির আয়োজকরা কমপক্ষে কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্যের টার্গেট নিয়ে নেমে পড়েছেন মাঠে। হোটেল ইন-ডুরে আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যেই লাখ লাখ টাকায় বুকিং দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি তারকা মানের হোটেল লবি, কিংবা কনফারেন্স হল।
থার্টি ফাস্ট নাইট ও তিন দিনের বীচ কার্ণিভাল উপলক্ষে চলবে ডিজে পার্টি। এসব পার্টিতে বিদেশি মদ, বিয়ার, ইয়াবা ও শ্যাম্পেনের নেশায় ডুবে যাবে তরুণ সমাজ। সেই সাথে ডিজে গার্লদের সাথে পাশ্চাত্য কায়দায় রাতের উষ্ণতা উপভোগ করবে তারা। এজন্য চট্টগ্রাম, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের শতাধিক ডিজে গার্লদের বুকিং করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি সুত্র।
থার্টি ফাস্ট নাইটে কেবল মদ, বিয়ার আর শ্যাম্পেইন নয়, ওই সব হোটেলে রিজার্ভ করে রাখা ৫০টি সিংগেল কক্ষে থাকবে বিশেষ বিনোদনের ব্যবস্থা। এসব কক্ষে সারারাত ধরে চলবে ডিজে গার্লদের শরীর বেচাকেনা।
এদিকে, থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে সারাদেশের মতো কক্সবাজারেরও সব বার, ক্লাব, রেস্তোরা, হোটেল ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কেবল তারকা ও নন তারকা হোটেলই নয়, কক্সবাজার শহর, শহরতলি, পেচারদ্বীপ ও ইনানীর হোটেল , কটেজে চলবে এধরনের আয়োজন। হোটেল কক্স টু-ডে, সী গাল, ওশান প্যারাডাইস, লংবীচ, সী ওয়াল্ড, দ্যা সী প্রিন্সেস হোটেল, প্যারাডাইসহ সবগুলো ফাইভস্টার, থ্রিস্টার, টুস্টার হোটেল, ক্লাবসহ কয়েকটি সুটিং স্পট তথা বাড়িতেও আয়োজন করা হয়েছে থার্টি ফাস্ট নাইট বা রেড নাইট পার্টির। বীচ কার্ণিভাল ও থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে এসব হোটেল মোটেল মালিকরা বিশেষ ছাড়েরও ব্যবস্থা রেখেছে।
ওই সব পার্টির আয়োজকরা তাদের মোবাইল ও ফেসবুকের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তরুণ-তরুণীদের। টিকিট নির্ধারণ করা হয়েছে-সিঙ্গেল, ডাবল বিভিন্ন টাকার অংকে। পার্টিতে ডিনারের অফারও দেয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যেই উৎসব এর টিকিটও ছেড়ে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গছে, হোটেল এ ধরনের পার্টি আয়োজন করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে হোটেল কর্তৃপক্ষ থার্টি ফাস্ট নাইটে ডিজে পার্টির আয়োজন করেছে।
সূত্রগুলো আরো জানায়, থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে ডিজে পার্টির আয়োজকরা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগও করেছেন। তারা ইতোমধ্যেই কেউ কেউ সরকারী অনুমোদন পেয়েও গেছেন।
কয়েকজন আয়োজক জানান, থার্টি ফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান সন্ধ্যার পর শুধু সৈকতেই বন্ধ করা হয়েছে। কোন হোটেল মোটেলে সন্ধ্যার পর ইনডোরের আয়োজন বন্ধ করেনি।
কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফাইভ স্টার ও থ্রি স্টার মানের হোটেল খোলা থাকবে। সেখানে বিদেশিরা মদ পান করতে পারবেন। তবে এসব হোটেলে ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাংলাদেশিরা প্রবেশ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে কোনো হোটেল কর্তৃপক্ষ যদি এ নির্দেশনা অমান্য করেন, তবে তার বিরুদ্ধ যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ