দীর্ঘ মন্দার পর সুবাতাস বইছে দেশের পুঁজিবাজারে।বাজারে ফিরছেন সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরা। নতুন কমিশনের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আস্থা বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের।প্রভাবে বাড়ছে সূচক, বাড়ছে লেনদেন।তবে এই আগ্রহের উপর চির ধরাচ্ছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)ট্রেডিং সফটওয়ার।লেনদেন বাড়লেও চাপ নিতে পারছে না সফটওয়ারটি।ফলে লেনদেনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বিনয়োগকারীদের।গতকাল মঙ্গলবার ডিএসইতে বেলা ১২টা থেকে লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত সমস্যা করেছে।বাই সেল করতে গেলে শুধু লিখা উঠতো ‘ট্রেডিং সার্ভিস আর কারেন্টলি নট এভেইলেবল নো অর্ডার কেন বি সেন্ট’।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ডিএসই সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বিনিয়োগকারীরা। তবে বিনিয়োগকারীদের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই)। কারণ লেনদেন যত বাড়বে আয় ততো বাড়বে।
বিষয়টি নিয়ে নাখোশ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।তবে আইটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই)কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ
এদিকে, ২০২০ সালের ২০ আগস্ট ওয়েবসাইটের উন্নত সংস্করণ চালু করে ডিএসই। সেসময় বলা হয়েছিল, আপডেটেড ওয়েবসাইটটি বিনিয়োগকারী বান্ধব ও অত্যন্ত রেসপন্সিভ হবে। কিন্তু আপডেটেড ওয়েবসাইট চালুর পর থেকেই দেখা দেয় বিপত্তি। ওয়েবসাইটে প্রবেশে সমস্যা, ঠিকমত তথ্য হালনাগাদ না হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আসতে থাকে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। তাছাড়া বাড়তি লেনদেনের চাপ নিতে পারছিল না ডিএসইর ওএমএস সিস্টেম। সেসময় লেনদেন সময় বাড়ানোর পাশাপাশি সমস্যার জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিল ডিএসই। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির পক্ষ থেকে ২৪ আগষ্ট ডিএসইর ওয়েবসাইট ও ট্রেডিং সিস্টেমের ত্রুটি অনুসন্ধানের জন্য ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ও আইসিটি সেলের পরিচালক ড. মো. আসিফ হোসাইন খান, তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের (আইআইটি) পরিচালক ও অধ্যাপক ড. মো. শরীফুল ইসলাম, বিএসইসির এমআইএস বিভাগের পরিচালক রাজীব আহমেদ, এসআরএমআইসি বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং সার্ভিল্যান্স বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম।
তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ট্রেডিং সিস্টেম ত্রুটিপূর্ণ এবং বাড়তি লেনদেনের চাপ নিতে সক্ষম নয়। একইসঙ্গে এক্সচেঞ্জটির ওয়েবসাইটও বেশি দুর্বল। এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুততার সঙ্গে নতুন অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) আনার পাশপাশি ওয়েবসাইটে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
ত্রুটির বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান বলেন,ডিএসই অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (ওএমএস)ক্রটির বিষয়ে আমরা আলাপ করেছি। তবে কিছু সমস্যা আছে, বিএসইসির তদন্তের পর বিষয়টি আরও পরিস্কার হয়েছে। এটি উন্নত করার কাজ চলছে। তিনি বলেন,ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ তথ্য প্রযুক্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ ।
বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি বলে মনে করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন,এখানে দুটি বিষয়। একটি হলো ডিএসইর অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (ওএমএস)ক্রটি আছে। এর আপগ্রেডেশন জরুরি।বিষয়টি সময় স্বাপেক্ষ। আর দ্বিতীয়টি হলো ডিএসই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। আমরা আশাবাদী বাজার আরও ভালো হবে। এখন যদি চাপ নিতে না পাড়লে সামনে কী করবে।
তিনি বলেন, আমরা ডিএসইকে গাইড করতে পারি। বাস্তবায়ন ডিএসইকেই করতে হবে। আমার জানা মতে ২০২০ সালের ক্রুটির পর তারা এটি উন্নত করার জন্য বাজেট পাশ করেছে। কিন্তু তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে না।