রাজবাড়ীর পদ্মা ও গড়াই নদীর চর কেন্দ্রিক বিভিন্ন এলাকা মৌ মৌ গন্ধে চারিদিক মাতোয়ারা। নজর কাঁরছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ।
সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি, কালুখালি ও গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা, দেবগ্রাম, উজানচর ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফসলের মাঠের দৃশ্যপট। শীতের শিশিরভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো মাঠ দেখে মন জুড়িয়ে যায়।
রাজবাড়ী সদর বালিয়াকান্দি, কালুখালি, পাংশা ও গোয়ালন্দ উপজেলার চর কেন্দ্রিক বিস্তীর্ণ এলাকা জুরে এ মৌসুমে ব্যাপক সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সরিষার সবুজ গাছের ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে ঝলমল করছে। এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্য্য’র দৃশ্য। দেখে যেন মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে, গায়ে হলুদ বরণ সেজে। মৌমাছির গুণগুণ শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত সেসব। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমনি চিত্র দেখা যায়।
গোয়ালন্দের দেবগ্রামের কাউয়ালজানি এলাকার কৃষক মোক্তার আলী শেখ বলেন, সরিষা চাষে খরচ কম কিন্তু লাভটা অনেক বেশি। সরিষা ক্ষেতে সার একবারের বেশী দিতে হয় না, পরিশ্রমও অনেক কম। আমি গতবার ১ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলাম। ফলন ও লাভ বেশী হওয়ায় এবার ২ একর জমিতে সরিষার চাষ করেছি। আশা করছি এবারও ভাল ফলন ও দাম পাব।
পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ধানসহ অন্যান্য খাদ্যশষ্য উৎপাদন করতে যেমন পরিশ্রম হয় তেমনি খরচও হয় অনেক। কিন্তু বাজারে ন্যায্যমূল্য পায়না। তাই অল্প সময়ে স্বল্প খরচে ও স্বল্প পরিশ্রম হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা পেয়াজের পাশাপাশি সরিষা চাষেও আগ্রহী হয়ে উঠছে। কাজেই সরিষাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আরো বাড়ালে এখানকার কৃষকরা উপকৃত হতো।
এবিষয়ে রাজবাড়ী জেলা কৃষি কর্মকর্তা গোপাল কৃঞ্চ দাস জানান, এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭ হাজার ৪শ ৭৯ হেক্টর জমিতে। কিন্তু গত বছর ফলন ভালো ও দাম বেশি পাওয়ায় এবার এ অঞ্চলে কৃষকরা বারি-১৪, বারি-১৭, বারি১৮ ও বিনা সরিষা-৪ এবং মাঘি সরিষা (টরি-৭) সহ নানা জাতের সরিষার আবাদ করেছে।
এ অঞ্চলে প্রতি একর জমিতে ১৫ মণ পর্যন্ত সরিষার ফলন হয়। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে এবারও সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতে এই অঞ্চলের ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণের জন্য সরিষার পাশাপাশি তিল, তিসিসহ অন্যান্য তৈলবীজ আবাদের জন্য কৃষকদের আগ্রহী করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সানবিডি/নাজমুল