পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে জারী করা তদন্তের গাইডলাইন স্থগিত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। বিষয়টি সানবিডিকে নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবি দর উঠা-নামা,শেয়ার প্রতি আয়(ইপিএস) অস্বাভাবিক পরিবর্তন খতিয়ে দেখার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জকে একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছিলো। সেই গাইডলাইন আজকে স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, সব কোম্পানিকে একইভাবে দেখা হয় না। এই কথাকে মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছিলো। যাতে করে একই গাইডলাইন মেনে সব কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারে। কিন্তু পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি ভালোভাবে নেই বলে মনে হয়েছে। তাই এটিকে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিতে চায় কমিশন। সেই জন্য তদন্তের গাইডলাইনটি স্থগিত করা হয়েছে।
সূত্র মতে, এর আগে গত ১১ জানুয়ারি বিএসইসির উপ পরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) এবং দুই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাদেরকে (সিআরও) দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে চারটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা পরিপালন করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে ৪৫ কার্যদিবস। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, চারটি নির্দেশনার হলো- প্রথমত, পুঁজিবাজারে গত ৩০ কার্যদিবসে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে বা কমেছে, সেসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন তদন্ত করতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। এসব কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কোনো কারসাজি, ইনসাইডার ট্রেডিং বা অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় হলো- যেসব কোম্পানির প্রান্তিক কিংবা বার্ষিক আয় আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বা তার বেশি তারতম্য ঘটেছে, তাও খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় হলো- গত এক মাসে যেসব কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন আগের ছয় মাসের তুলনায় পাঁচ গুণ বা তার চেয়ে বেশি বেড়েছে, তাও তদন্ত করতে বলেছে বিএসইসি।
চতুর্থ হলো-এছাড়া কোনো কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের আগের ১০ দিনে শেয়ারের মূল্য ও লেনদেন ৩০ শতাংশ বা তার কম-বেশি বেড়ে থাকলে তাতে কোনো কারসাজি বা ইনসাইডার ট্রেডিং হয়েছে কি না, সেটিও খুঁজে দেখবে স্টক এক্সচেঞ্জ। তবে বিএসইসির নির্দেশনায় সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্তের কথা বলা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন ৪৫ কার্যবিসের মধ্যে এসইসিতে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন