পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের সার্বিক তদারকির জন্য পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একই সাথে কোম্পানিটিতে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এই প্রথম কোন কোম্পানিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিলো বিএসইসি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসি সূত্র মতে, কোম্পানিটির পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম ও ডিএসইর একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থাকবেন। তবে এখানে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকবেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে কোম্পানিটিতে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। তারা হলেন-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমসের অধ্যাপক ড.এ.এম সালা উদ্দিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর সহযোগী অধ্যাপক ড. মিলিতা মেহজাবীন।
এর আগে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের সার্বিক তদারকির জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া বিগত ২ অর্থবছরের আর্থিক অবস্থাসহ সার্বিক বিষয় নিরীক্ষার জন্য বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বিএসইসির ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমেছে। এরপরে কোম্পানিটির কোন উন্নতি হয়নি। এছাড়া কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা মাত্র ১২.৭৮ শতাংশ শেয়ার ধারনের মাধ্যমে বিএসইসির সর্বনিম্ন ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনের নির্দেশনা ভঙ্গ করেছে।
অথচ কোম্পানিটিতে ৮৭.২২ শতাংশ শেয়ার ধারন করেও সাধারন শেয়ারহোল্ডাররা গত ২ অর্থবছর ধরে কোন লভ্যাংশ পাচ্ছে না। যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকারক ও কমিশনের কাছে অপ্রত্যাশিত।
এরইমধ্যে একজন পরিচালক ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালে ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার উচ্চ দরে (১০০ টাকার উপরে) বিক্রি করেছে। যা ঘোষণা ছাড়াই বিক্রির মাধ্যমে সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরন বিধিমালা ভঙ্গ করা হয়েছে।
পর্যবেক্ষক কমিটি কোম্পানির ৩৭তম ও ৩৮তম বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) তদারকি করার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া আলহাজ্ব টেক্সটাইলের সর্বশেষ ২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবসহ (২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০) কোম্পানির সার্বিক বিষয় নিরীক্ষার জন্য কমিশন বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ব্যয়ভার বহন করবে কোম্পানি। একইসঙ্গে কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে নিরীক্ষকের চাহিদা অনুযায়ি সহযোগিতা করতে হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
অন্যদিকে কমিশনের অনুমোদন ছাড়া কোম্পানির কোন সম্পদ বিক্রি, বন্ধকী, হস্তান্তর বা নিষ্পত্তি করা যাবে না বলে জানিয়েছে বিএসইসি।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আলহাজ্ব টেক্সটাইলের বর্তমানে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যে কোম্পানিটির মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ৩৩.৩০ টাকায়।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ