সব মানুষকে বিমার আওতায় আনতে হবে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২১-০১-২৪ ২০:৫৬:৫৬


সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে বিমার আওতায় নিয়ে আসা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. মো. মোশাররফ হোসাইন এফসিএ। তিনি বলেন বিমা খাত নিয়ে হতাশার দিক থাকলেও এই খাত ভিতরে ভিতরে অনেক ভালো কাজ করে যাচ্ছে।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিন আয়োজিত বিমা খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান। কী-নোট উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ এবং প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের এমডি মোঃ জালালুল আজিম।

প্যানেল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, ন্যাশনাল লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাজিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স একাডেমির চিফ ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম ইব্রাহিম হোসাইন।

ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক একেএম রাশেদ শাহরিয়ার। সঞ্চলনা করেন পত্রিকার চিফ রিপোর্টার গিয়াস উদ্দিন।

আইডিআরএ- এর চেয়ারম্যান ড. মো: মোশাররফ হোসাইন বিমা খাতকে একটা উল্লেখযোগ্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করে বলেন, বিমা খাতকে একটা বিশ্বাসযোগ্য স্থানে দাঁড় করাতে চাই যেন বিমা খাতের উপর মানুষের আস্থা তৈরি হয়।

তিনি বলেন, বিমা খাত সবসময় মানুষের কল্যাণের কথা ভাবে। মানুষ যেন ভালো থাকে এটাই বিমা খাতের চাওয়া। দেশের সব মানুষ বিমার আওতাভুক্ত হলে এই খাত যেমন এগিয়ে যাবে তেমনি মানুষও এর দ্বারা উপকৃত হবে ।

এ সময় তিনি বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে বিমা খাতের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বিমা খাতের অবদান মাত্র ০.৫৭ শতাংশ। ভারতের অর্থনীতিতে তাদের বিমা খাতের অবদান ৩.৬৯, এমনকি ইন্দোনেশিয়াতে বিমা খাতের অবদান ২.৩৬।

ড. মো: মোশাররফ হোসাইন আরো বলেন, বাংলাদেশ একটি টেকসই অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা বিমা খাত নিয়ে তার সমান্তরালে হাটতে পারিনি। তবে আমাদের অর্থনীতি সম্ভাবনাময়। আমরা যোগ্যতার সাথে এগিয়ে গেলে দেশের অর্থনীতি অবদান রাখতে পারবো।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান দেশের সকল পেশার সকল মানুষকে বীমার আওতায় আনতে বিমা খাতকে আস্থা অর্জন করতে হবে বলে জানান।

ড. মিজানুর রহমান বলেন, এই খাতে সমস্যা যেমন আছে তেমন সম্ভাবনাও আছে। যোগ্য মানুষদেরকে নিয়ে আসতে পারলে এই খাত এগিয়ে যাবে। বিমা খাতে এমন একটা জায়গা সৃষ্টি করতে হবে যেন মেধাবীরা এই অঙ্গনে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী হয়। তবে বিমা খাত নিয়ে মানুষের মধ্যে অনাস্থা এবং ভুল ধারণা রয়েছে যা দূর করতে বিমা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গুরুত্বের সাথে কাজ করতে হবে বলে ।

প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স একাডেমির চিফ ফ্যাকাল্টি মেম্বার এস এম ইব্রাহিম হোসাইন বলেন, বিমার ব্যপারে গ্রাহককে আলোকিত করতে হবে- তাহলে বিমা খাত টিকে থাকবে এবং এগিয়ে যাবে। আর প্রলুব্ধ করলে বিমা খাতে সাময়িক সফলতা আসলেও দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকবে না।

তিনি এই খাতে নারীদের অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, নারীদের যদি সম্পৃক্ত করা যায় তাহলে গ্রাহক বেড়ে যাবে। তাই নারীদেরকে যত বেশি সম্পৃক্ত করা যায় তত বিমা খাতের জন্য কল্যাণ হবে। দেশের সব মানুষের সকল সম্পদকে বিমার আওতায় আনতে আইডিআরএ, সরকার এবং এসোসিয়েশনকে ভূমিকা নেওয়ার জন্য আহবান জানান তিনি।

তিনি বলেন, শ্রীলংকা ১৯২৯ সালে তাদের কৃষিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কৃষি বিমা চালু করে আর আমরা এখনও কৃষি বিমা চালু করতে পারিনি। তাই আমাদের কৃষি বিমা চালুর ব্যাপারে ভাবা উচিৎ।