বিবিএসের জরিপ : দেশে ২৬ লাখ মানুষ বেকার
প্রকাশ: ২০১৬-০১-০২ ২২:৩১:২৪
দেশে ২৬ লাখ লোক বেকার। এর মধ্যে পুরুষ বেকার ১২ লাখ ৮০ হাজার আর মহিলা বেকার ১৩ লাখ ১০ হাজার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রম জরিপ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৩ সালের মোট জনসংখ্যার ১৫ বছর বয়সী ও তার অধিক বয়সের মানুষের মধ্যে এ পরিমাণ বেকার রয়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। চলতি মাসের শেষদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
বিবিএসের জরিপে বলা হয়, ২০১৩ সালে দেশে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৪১ লাখ। এর মধ্যে ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম। অর্থাৎ এদের বয়স ১৫ বা তার চেয়ে বেশি। এ হিসাবে দেশে প্রতি ১০ জনে ৭ জন মানুষের বয়স ১৫ বছর থেকে তার ঊর্ধ্বে। ২০১৩ সালের হিসাব অনুসারে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দশকে শিক্ষিত বেকারত্বই হবে বাংলাদেশের জন্য প্রধান সমস্যা। বাংলাদেশে যে হারে শিক্ষিত শ্রমশক্তি তৈরি হচ্ছে সে অনুসারে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। এছাড়া শিক্ষিত শ্রমশক্তির মধ্যে দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা খুবই কম। সরকারি সংস্থা বিবিএসের জরিপে দক্ষ শ্রমশক্তির বিষয়টিও উঠে এসেছে। বিবিএসের জরিপে যে তথ্য উঠে এসেছে তা হলো- মোট শ্রমশক্তির ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষিত। ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেছে। মাত্র ১ শতাংশ রয়েছে যারা ভোকেশনাল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছে ২ দশমিক ১ শতাংশ। বাকিরা কোনো সময় বিদ্যালয়েই যায়নি।
জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে শ্রমবাজারে প্রবেশকারী শিক্ষিত যুবকদের বেশির ভাগেরই বয়স কম। এজন্য তাদের প্রশিক্ষণের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, বেকারত্বের হার কমাতে চাইলে অবশ্যই দেশি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। গত কয়েক বছর থেকে দেশে বিনিয়োগের খরা কমছে না। যা নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করা যায়নি। এজন্য কর্মসংস্থান প্রত্যাশা অনুসারে বাড়ছে না।
বিবিএসের জরিপ থেকে আরো জানা যায়, দেশে ৫ কোটি ৮১ লাখ মানুষ কর্মক্ষেত্রে রয়েছে। এর মধ্যে কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের কর্মসংস্থান। শতকরা হিসাবে এটা ৩৬ দশমিক ৮। ১৮ শতাংশ মানুষ ক্ষুদ্র ও সমপর্যায়ের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ১৬ শতাংশ মানুষ সেবা ও বিক্রয়কর্মী হিসাবে, ৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মেশিন অপারেটর এবং ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ অন্যান্য পেশার সঙ্গে জড়িত।