মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান: রোহিঙ্গা সংকট কোনদিকে মোড় নিবে?
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০২-০২ ১১:৪৭:১৬
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির নেত্রী অং সান সুচি এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট উহন মিন্ট সহ শীষস্হানীয় কয়েকজন নেতাকে সেনাবাহিনী আটক করে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী সামরিক শাসন জারি করেছে। কমান্ডার-ইন-চিফ অং হ্লেইংয়ের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।
মায়ানমারের সকল রাজনৈতিক ইস্যুই এখন বাংলাদেশের জন্য ভাবনার বিষয়। কারণ রোহিঙ্গা সংকট। মায়ানমারের রাজনৈতিক ইস্যুগুলো এই সমস্যা সমাধান ও বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রিত।তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ নানা রকমভাবে চেষ্টা করেছে যা বরাবরই হয়েছে ব্যর্থ। নানারকম টালবাহনা করেছে মায়ানমার সরকার।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন সময়ে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সুচি বন্দি হয়েছেন। মায়ানমারে ইতোমধ্যে কায়েম হয়েছে সামরিক শাসন। বাংলাদেশ সতর্ক হওয়া শুরু করেছে। কী ঘটতে পারে, কোনদিকে মোড় নিবে রোহিঙ্গা ইস্যু তা নিয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। কেউ আশা প্রকাশ করছে তো, কেউ আবার শঙ্কা প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানান যে, উদ্ভুত পরিস্হিতিতেও দেশটিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অব্যাহত থাকবে বলেই আশা করা যায়।
আবার,সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক এটাশে মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক বলেন, ‘‘আমার বিবেচনায় আগামী এক বছরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন পিছিয়ে গেল।তিনি মনে করেন, সামরিক সরকার যেসব পরিকল্পনা করে ক্ষমতা দখল করেছেন আগে সেগুলো পূরণ করবেন।
আবার অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষক ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, সামরিক সরকার শাসনে থাকা বা না থাকা দিয়ে তো রোহিঙ্গা ইস্যুর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের সম্পর্ক মিয়ানমার রাষ্ট্রটির সঙ্গে। আমাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তরাষ্ট্রীয় আলোচনা চলছে। শাসকের রদবদলে এর হেরফের হওয়ার কথা না।
নানারকম তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে মায়ানমার সামরিক অভ্যুত্থানের পর। এমন অবস্হায় বাংলাদেশ সরকার কী করবে?একবছর অপেক্ষা করবে, না আন্তর্জাতিক মহলে রোহিঙ্গা ইস্যুটাকে জোড়ালো ভাবে উপস্হাপন করবে? সামরিক এই অভ্যুত্থান কতটুকু প্রভাবিত করবে সেটিই এখন দেখবার বিষয়।
লেখক:
সাদিয়া সাবাহ্
শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়