মাগুরা সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামের নাসির আহম্মেদ বীজ বিহীন কুল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। দেশে এই প্রথম মাগুরায় চাষ হওয়া বীজবিহীন কুল সফলভাবে চাষের পর এখন তিনি বাজারজাত শুরু করেছেন। কুলের পাশাপাশি উৎপাদিত চারা বিক্রি করেও তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, নাসির আহম্মেদ নতুন জাতের বীজবিহীন কুল ও উৎপাদিত চারা বিক্রি করে নিজে আর্থিক সফলতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছেন। কৃষি বিভাগও এই জাতটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে।
নাসির আহম্মেদ জানান, ইউটিউব থেকে বীজবিহীন এ কুলের সন্ধান পান তিনি। পরে গত বছরের এপ্রিলে ভারত থেকে দুই হাজার চারা সংগ্রহ করে তার চার একর জমিতে রোপণ করেন। চার-পাঁচ মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে। ফুল থেকে প্রতিটি গাছে প্রচুর কুল ধরে। বর্তমানে বাগানের প্রতিটি গাছে পাকা কুল শোভা পাচ্ছে।
ইতোমধ্যে পাকা এ কুল তিনি বাজারজাত করতে শুরু করেছেন। যার মধ্যে দুই একর জমির কুল তিনি ছয় লাখ টাকায় স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করেছেন। বাকি দুই একর জমির কুল বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। ৪ একর জমিতে বীজবিহীন এ কুল চাষে নাসির আহম্মেদের প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
তবে উৎপাদিত কুল ১০ লাখ টাকা ও উৎপাদিত প্রায় ৫ হাজার চারা থেকেও কয়েক লাখ টাকা আয় হবে বলে তিনি আশা করেন। ইতোমধ্যে এলাকার অনেকে তার কাছ থেকে চারা কিনে বাগান করেছেন। প্রতিটি চারা তিনি ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
মশিউর রহমান, মিন্টু মিয়াসহ অনেক ব্যাপারী বলছেন, তারা নাসিরের বাগান থেকে কুল কিনে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মানিকগঞ্জ, সাভার, বাইপাইলে নিয়ে বিক্রি করছেন। বাজারে বীজবিহীন নতুন জাতের এ কুলের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। নাসির আহম্মেদের পাশাপাশি তারাও এ কুল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
হাজিপুর ইউনিয়নের শওকত হোসেন, বদরুল আলমসহ একাধিক কৃষক বলছেন, নাসির আহম্মেদ নতুন জাতের এ কুলের চাষ করে শুধু আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তা নয়, এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন, নাসির আহম্মেদ কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণের পথে সফল হয়েছেন।