সিরাজগঞ্জসহ ৪ জেলার ঐতিহ্যবাহী চলনবিল এলাকায় এবার মৌসুমি ক্ষীরা চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে হাট-বাজারে ক্ষীরার দাম ভাল থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ মৌসুমি ক্ষীরা যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলনবিল এলাকার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর পাবনার চাটমোহর, ফরিদপুর ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ক্ষীরা চাষ করা হয়েছে।
এ বছর আবহাওয়া অনেকটা অনুকূলেসহ বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ অনেকটাই স্বল্পমূল্য পাওয়ায় এ ক্ষীরার বাম্পার ফলন হয়েছে। এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দিঘুরিয়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ইতিমধ্যেই গড়ে উঠেছে ক্ষীরার মৌসুমি হাট। সেইসাথে একই এলাকার রানীরহাট, মান্নাননগর, কোহিত ও হাটিকুমরুলসহ অনেক গ্রামঞ্চলে গড়ে উঠেছে ক্ষীরা বিক্রির অস্থায়ী আড়ত। এসব আড়ত ও হাটে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগাম ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে ক্ষীরা কিনে নিয়ে যায় ট্রাকযোগে।
তাড়াশের বারুহাস অঞ্চলের আদর্শ কৃষক আপনসহ অনেকে বলছেন, এবার ক্ষীরার বাম্পার ফলন হয়েছে। ক্ষীরা চাষে খরচ বাদে এবার অনেকটাই লাভ হচ্ছে। এ ক্ষীরার দাম এখন কিছুটা কমে গেলেও গরম মৌসুমে তা বাড়বে। দিঘুরিয়াহাটসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন আড়তে বর্তমানে প্রতি মণ ক্ষীরা গড়ে ৬শ থেকে ৭শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর জেলা ও উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে খুচরা মূল্য বিক্রি হচ্ছে গড়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি।
এ অঞ্চলের অনেক কৃষকের নিজের জমি না থাকলেও অন্যের জমি লিজ নিয়ে এ লাভজনক ক্ষীরার আবাদ করেছেন। প্রায় প্রতি বছরই ক্ষীরা চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় অধিকাংশ কৃষক এ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়ে। বিঘাপ্রতি জমিতে ক্ষীরা চাষে খরচ বাদে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা করে লাভ হচ্ছে। ক্ষীরা ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেমসহ অনেকে বলছেন, তাড়াশের দিঘুরিয়া ক্ষীরার আড়ত থেকে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর প্রতিদিন ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনে এ ক্ষীরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবু হানিফসহ সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, চলনবিল এলাকায় এবারও ক্ষীরা চাষে কৃষকরা ব্যাপক সফলতা পাচ্ছে। মৌসুমি এ ক্ষীরা চাষীদের যথাসময়ে পরামর্শও দেয়া হয়েছে। এ পরামর্শে মৌসূমী ক্ষীরা চাষীরা
লাভবান হচ্ছে বলে তারা উল্লেখ করেন।