শাহরিয়ার রহমান: সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শিবনগর গ্রামে জেলার মানুষের বিনোদনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র। সুন্দরবনের কাছে হওয়ায় অনেকে মিনি সুন্দরবন বলেও আখ্যা দিচ্ছে।
প্রকৃতির রূপ-লাবণ্যে ঘেরা এই পর্যটন কেন্দ্রটি সাতক্ষীরায় এনে দিয়েছে অপার সম্ভাবনা। ভৌগলিক ভাবে এই অঞ্চলটি যেন প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের আঁচলে ঢাকা। এখানে এসে পর্যটকরা মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন শীতল প্রকৃতির। এখানকার প্রাকৃতিক শোভা অতি অল্প সময়ে মুগ্ধ করে সবাইকে।
বাংলাদেশ ও ভারতকে ভাগ করা ইছামতী নদীর তীর ঘেঁষে এই কৃত্রিম বনাঞ্চলের অবস্থান। যা প্রকৃতির এক অপরূপ নিদর্শন। নদীর তীরে প্রায় সব সময়ই দেখা যায় লাল কাঁকড়ার দল ছোটাছুটি করছে। নানা প্রজাতির পাখির নির্বিঘ্ন বিচরণ তো রয়েছেই। কৃত্রিম বনাঞ্চলে সুন্দরবনের ছোঁয়া দিতে এখানে রয়েছে কৃত্রিম বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী।
বনের মধ্যে বন আর নদীর অপরূপ সৌন্দর্য্য দর্শনে পর্যটকদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ফুট ট্রেইল। এছাড়াও বনের ভেতর নির্মাণ করা হয়েছে রেস্ট হাউজ ও গোলঘর। সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা দৃষ্টিনন্দন এই বনে রয়েছে কেওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
রূপসী দেবহাটা পর্যটন কেন্দ্রের একদিকে ইছামতি নদী অন্যদিকে কৃত্রিম সুন্দরবনের মাঝে ছড়িয়ে থাকা সবুজের সমারোহ যেন দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।
প্রকৃতির এই সাজানো রূপসী পর্যটন কেন্দ্রে জেলার কর্মব্যস্ত মানুষেরা পরিবার পরিজন নিয়ে একটু বিনোদনের জন্য ছুটে আসেন। রুপসী দেবহাটার পিকনিক স্পটটি প্রশাসনের পৃষ্টপোষকতায় ইতোমধ্যে অন্যতম একটি বৃহৎ বিনোদন কেন্দ্র রুপে রুপ ধারন করেছে। কেন্দ্রটিকে আরো নান্দনিক ও নয়নাভিরাম করে গড়ে তুলতে বনের পাশে অবস্থিত দীঘিতে প্যাডেল বোট, দীঘির পাশে পাকা বেঞ্চ নির্মান করা হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলা সদর থেকে রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যন্ত পিচের রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজ করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃত্রিম সব জীবজন্তু, খেলনা সামগ্রীসহ নয়নাভিরাম ও সৌন্দর্যমন্ডিত এ পর্যটন কেন্দ্রটিতে পরিবারের সাথে আনন্দে মেতে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে শিশুরাও।
পর্যটন কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপক দিপঙ্কর কুমার ঘোষ জানান, এখানে সব ধরণের দর্শণার্থীদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। বর্তমানে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র।
এদিকে, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার জানিয়েছেন, এই পিকনিক স্পটটি আরো সুন্দর করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য এই বিনোদন কেন্দ্রটিতে রয়েছে। তাই এটিকে আরো নান্দনিক ও সৌন্দর্যপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। এছাড়া এই রূপসী ম্যানগ্রোভকে আরো নান্দনিক করতে অনেক কাজ চলমান রয়েছে।
রূপসী দেবহাটা শুধু বিনোদন কেন্দ্রই না। এটি সরকারের রাজস্ব আয়ের একটা বড় উৎস হিসেবেও পরিগনিত হচ্ছে। যা দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিকে গতিশীল করছে। তাই মিনি সুন্দরবন খ্যাত এই পর্যটন কেন্দ্রটিকে আরো উন্নত করতে হবে যাতে স্পটটি আরো জনপ্রিয় হয়।