পবিত্র কোরআন শরীফে ত্বীন ফল নিয়ে একটি সূরা রয়েছে। যে দুটি ফলের শপথ করে সুরা আত-ত্বীন নাজিল হয় তার মধ্যে যয়তুন (জলপাই) এর সাথে রয়েছে এই ত্বীন ফলের নাম। ত্বীন শব্দের অর্থ হচ্ছে আঞ্জির বা ডুমুর। তাই একে অনেকে ডুমুর ফল বলেও ডাকেন। আরবে সেই যুগে এই ত্বীন ও যয়তুন ছিলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি ফল, খাদ্য ও অর্থকরী ফসল হিসেবে এর গুরুত্ব ছিল অসীম।
ত্বীন ছাড়াও পবিত্র কোরআনের ঐ সূরায় উল্লেখিত যয়তুনের গাছও রয়েছে। ত্বীন ফল বিভিন্ন প্রকার ও রংয়ের হয়ে থাকে যেমন: সুইট লেমন, সাদা জাম, লাল জামরুল, লাল আতা, বারোমাসি আমড়া, মালবেরি, স্ট্র বেরি, লাল আতায় ।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: আব্দুর রহিম বলেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধে এই ফল খুবই উপকারী। বাংলাদেশের ৩৪ শতাংশ নারী যেখানে ব্রেস্ট ক্যান্সার ঝুঁকিতে আছেন, সেখানে এই ত্বীন ফল এই ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে। এর আরও অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে বলেও জানান ড. রহিম। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ত্বীন। এতে আছে প্রচুর পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম। পুষ্টি চাহিদা পূরণেও ত্বীন গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাতে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য অনেকেই উদ্বোগ নিয়েছে। দেশের সাতক্ষীরা ও দিনাজপুরের বেশ কজন চাষী ত্বীন গাছের বাগান তৈরী করেছে। অনেকেই সখের বসেও ছাদ বাগান তৈরী করেছে। “পবিত্র কোরআন শরীফে ত্বীন ও যয়তুন ফলের কথা উল্লেখ আছে জেনে ত্বীন ফল চাষে আগ্রহীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।
সাতক্ষীরা জেলার আসিফ নামের এক যুবক বলেন, তার এখন ছাদবাগানে ৮ থেকে ১০ প্রজাতির ত্বীনগাছ রয়েছে , মাটিতে জৈব সার মিশিয়ে ছাদের রোদে টবে লাগিয়েছেন কয়েক প্রজাতির ত্বীন। বর্ষা ও শীতে ফল কম হলেও বছরের অন্যান্য সময়ে প্রতিটি পাতার গোড়ায় জন্মে একটি করে ফল। আসিফ জানান, স্বাভাবিক পরিচর্যায় জৈব সারেই বেড়ে ওঠে। মাত্র ছয়মাসের ব্যবধানে ত্বীন ফল পাকতে শুরু করে। পাকলে প্রকার ভেদে লাল, খয়েরি, গোলাপী ও হলুদাভ রংয়ের এই ফল আকারেও বেশ বড় হয়।