পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি ) ফ্লোর প্রাইস (Floor Price) বা গ্রহণযোগ্য সর্বনিম্ন মূল্য প্রথা নিয়ে নতুন নির্দশনা দিয়েছে। বোনাস বা রাইট ইস্যু করলে রেকর্ড ডেটের দরের সাথে সমন্বয় করা হবে। তবে এ ক্ষেত্রে সূচকে কোন ধরণের প্রভাব পড়বে না। সোমবার বিএসইসির ৭৬১তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আরও পরিস্কার করার জন্য গত ১লা মার্চ নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি।
পূর্বের নির্দেশনায় বলা হয়েছিলো- পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বোনাস ও রাইট শেয়ার ঘোষণার রেকর্ড ডেট পরবর্তী ডাইলুশন প্রভাব বিবেচনায় কোম্পানির সমন্বিত মূল্য সংশোধিত ফ্লোর প্রাইস হিসেবে বিবেচিত হবে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রাইট বা বোনাস ইস্যুর পর রেকর্ড তারিখ নির্ধারিত হবে। রেকর্ড তারিখে যেখানে সমন্বয় হবে ; সেটি হবে ফ্লোর প্রাইস। অন্যদিকে যদি ফ্লোর প্রাইসের উপরে রেকর্ড তারিখের পরে সমন্বয় হয়; তাহলে পূর্বের নির্ধারিত ফ্লোর প্রাইসই হবে ফ্লোর পাইস।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সানবিডিকে বলেন,ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বিষয়টি পরিস্কার করা হয়েছে।
ধরেন- এবিসি একটি কোম্পানির শেয়ারের বর্তমান ফ্লোর প্রাইস ১০ টাকা। রেকর্ড তারিখে শেয়ারের দর ৩৩ টাকা নির্ধারিত হয়েছে; তাহলে এর ফ্লোর প্রাইস হবে ১০ টাকাই। আর যদি রেকর্ড তারিখে শেয়ারের দর ২৪ টাকা নির্ধারিত হয়েছে; তাহলে এর ফ্লোর প্রাইস হবে ৮ টাকা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পুঁজিবাজারে ভয়াবহ দরপতন দেখা দিলে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সর্বনিম্ন মূল্য বেঁধে দিয়ে গত বছর মার্চে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বিতর্ক তৈরি হচ্ছিলো। বিশেষ করে কোম্পানির বোনাস লভ্যাংশ ও রাইট শেয়ার ইস্যুর পরও ফ্লোর প্রাইসের কারণে প্রকৃত দর সমন্বয় হচ্ছিলো না। এমন পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিলো কমিশন। তবে সমন্বয়ের পর যে দর নির্ধারণ হবে তা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রাইস ফ্লোর হিসেবে বিবেচিত হবে। বর্তমানের ফ্লোর প্রাইসের শুধু এ অংশটি রিভিউ হবে।
ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের ক্ষেত্রে গত বছর ২২ মার্চের আগের পাঁচ দিনের গড় বাজারমূল্য বিবেচনায় নেওয়া হয়। তালিকাভুক্ত সব সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রেই এ দর বেঁধে দেওয়া আছে, যার নিচে কোনো শেয়ারের দাম নামবে না।
বর্তমানে অন্তত ৯২টি সিকিউরিটিজ ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। প্রায় ১১ মাস আগে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হলেও বর্তমানে ৯২টি কোম্পানির মধ্যে অধিকাংশেরই কোনো লেনদেন হচ্ছে না। ক্রেতা না থাকায় দিনের পর দিন এসব শেয়ারের দর অপরিবর্তিত থাকছে। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকে রয়েছে। তারল্যের বাজারে বিনিয়োগকারীরা চাইলেও এসব শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে যেসব কোম্পানি লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস ঘোষণা করেছে, ফ্লোর প্রাইসের কারণে দর সমন্বয় না হওয়ায় ক্রেতা সংকট পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন