অন্ধজনে আলো দেয়ার চেয়ে বড় কাজ হতে পারে না। অন্ধত্ব মানুষের জীবনকে অর্থহীন করে দেয়। দেশের ৭০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’-এর কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এর কার্যক্রম আরাম্ভ করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অন্ধজনে আলো দেয়ার চেয়ে বড় কাজ হতে পারে না। অন্ধত্ব মানুষের জীবনকে অর্থহীন করে দেয়। এই চিকিৎসার ফলে তারা সুস্থ হবেন। দেখতে পাবেন। জীবনটা হবে অর্থবহ। মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আমরা সেবাটা দিচ্ছি। পর্যাক্রমে প্রত্যেকটা উপজেলায় এই ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ করে দেয়া হবে।
এ সময় এক উপকারভোগীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে চান। তখন পীরগঞ্জের ওই নারী বলেন, ‘আমার স্বামী এখান থেকে অপারেশন করে কালো চশমা পেয়ে অনেক সুস্থ আছেন।’
পরে প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন আপনি আর কিছু বলবেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘বলতে চাই; চক্ষু চিকিৎসায় আমাদের এখানে আরও অনেক সুবিধা দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার কথা মনোযোগ সহকারে শুনেন। তার কথা শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ নিশ্চয়ই এগুলো করে দিচ্ছি, সব করে দেব।’
পরে প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, ‘আরে শ্বশুর বাড়ি বলে কথা, একটু বেশি কথা তো শুনতেই হবে।’ এসময় করোনা সংকট শেষ হলে পীরগঞ্জে যাবেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘জন্মান্ধতা দূর করার জন্য প্রসূতি মাকে চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছি। প্রসবের আগে ইনজেকশন দিয়ে দেয়া হয়। যার কারণে এখন সেটার ভালো রেজাল্ট পাচ্ছি। জন্মান্ধতা কমে গেছে। এছাড়াও ভিটামিন ই-সহ নানা টিকা দিয়ে রোগ যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করছি। যক্ষ্মাসহ নানা রোগ হলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭২ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীনতাবিরোধী, খুনি ও লুটপাটকারীরা ক্ষমতায় আসে। যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে এটা আশা করা যায় না। আমরা ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবার মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলাম। পরে ২০০১ সালে বিএনপি এসে এগুলো নষ্ট করেছে।’
বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যার কারণে আমি ভিডিও কনফারেন্সে আপনাদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে কথা বলছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ব্রডব্যান্ড লাইনসহ নানা সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করছি। মুজিব বর্ষে কেউ সেবা বঞ্চিত হবে না। কেউ গৃহহীন থাকবে না। এজন্য সারাদেশে ঘর করে দিচ্ছি। নদী ভাঙাদের ঘর করে দেয়ার জন্যও আলাদাভাবে বাজেটে ১০০ কোটি টাকা রেখেছি।
অনুষ্ঠানে চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ন্যাশনাল আই কেয়ারের পরিচালক প্রফেসর ডা. গোলাম মোস্তাফা, স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান।
একই সঙ্গে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা, চাপাইনবাগঞ্জের নচোল উপজেলা ও ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপকারভোগীরা এতে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন।