মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছেই। বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে রাজপথে এক মাসের বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ করছে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এদিকে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে আরও দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
দেশটির বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনের থারকেতা জেলায় শুক্রবার রাতে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছোড়ে পুলিশ। শনিবার দেশটির বিভিন্ন স্থানীয় গণমাধ্যমে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ডিভিবি নিউজ জানিয়েছে, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া লোকজনের মুক্তির দাবিতে থারকেতা পুলিশ স্টেশনে লোকজন জড়ো হলে পুলিশ বিক্ষোভের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে।
থাকেতা পৌরসভায় শনিবার ভোর হওয়ার আগেই পুলিশের অভিযানে দু'জন নিহত হয়েছে। অপরদিকে হ্লেইং পৌরসভায় একজনের মাথায় গুলি লাগে। গুলিতে আহত হওয়ার পর ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও তিনজন আহত হয়েছে।
শুক্রবার রাতে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বেশ কয়েকজন আটক হয়েছেন বা তাদের মারধর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে গুরুতর আহত এক ব্যক্তিকে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী। তিনি শনিবার সকালে গুলিবিদ্ধ হন।
এদিকে, দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে এবার নতুন অভিযোগ এনেছে দেশটির সামরিক সরকার। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে অবৈধভাবে ছয় লাখ ডলার এবং স্বর্ণ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। কিন্তু ভোটের ফলাফল সামনে আসার পর থেকেই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ আনে সেনাবাহিনী। এই অভিযোগ এনেই বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং সু চিসহ তার দলের কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে যে, তারা নির্বাচনে কোনো অনিয়মের প্রমাণ খুঁজে পায়নি। এছাড়া দেশটির নির্বাচন কমিশনও জানিয়েছে যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।
প্রায় পাঁচ সপ্তাহ ধরে সু চি বন্দি রয়েছেন। তাকে কোথায় রাখা হয়েছে সেটাও পরিষ্কার নয়। তাকে গ্রেফতারের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক নতুন অভিযোগ আনা হচ্ছে।
সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে মিয়ানমার। সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বিক্ষোভ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিলেও পরিস্থিতি শান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে, এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ৬০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।