মাগুরা জেলার সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় শতাধিক লিচু বাগান। ফাল্গুনের মাসের শুরুতে প্রতিটি লিচু বাগানে ইতোমধ্যে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। ফাল্গুনের হাওয়ায় এখন দুলছে এ লিচু ফুলগুলি। ফুল পরিপূণ হওয়ায় অনেক লিচু ফুলের বাগান থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ চাষিরা।
সরজমিনে হাজরাপুর গ্রামের আবু তাহেরের লিচু বাগানে গিয়ে কথা হয় ইছাখাদা গ্রামের মৌ-চাষি পিয়ারুলের সাথে।
তিনি জানান, ২০১০ সালে তিনি ৭টি মৌ-বক্স নিয়ে মধূ সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। মধু সংগ্রহের জন্য তাকে মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়। সরিষা ফুল,ধনে ফুল, কালো জিরার ফুল ও লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করেন তিনি। যে মৌসুমে যে ফসলের চাষ হয় তিনি সেই ফসল থেকে মধু সংগ্রহ করেন। পাশাপশি খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চলে সুন্দরবন থেকেও তিনি মধু সংগ্রহ করেন।
বর্তমানে কাজ করছেন হাজরাপুর গ্রামের আবু তাহেরের লিচু বাগানে। এ বাগানটি ৩৩ শতক জমিতে। এখানে প্রতিটি লিচু গাছে অসাধারণ ফুল এসেছে। ফুল পরিপূণ হওয়ায় তা থেকে মধু সংগ্রহ শুরু করছেনন তিনি। এখানে তার মৌ-বক্স রয়েছে ৫২টি। ৮দিন পর পর তিনি মৌ-বক্স গুলো খোলেন এবং তা থেকে ৪-৫ মন মধু সংগ্রহ করেন। প্রতি মন মধু বর্তমানে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের ৩৩ জেলা থেকে মধুর পাইকেররা তার নিকট থেকে মধূ সংগ্রহ করে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাঙামাটি, নরসিংদী, গাজীপুর জেলায় মধু তিনি বেশি পাঠিয়ে থাকেন।
কথা প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, পুরো মার্চ মাস ধরেই লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা যায়। এ মধু সাদা এবং খেতে খুবই পুষ্টিকর। প্রতি বছর মধু চাষ করে তার খরচ বাদে ৫ লক্ষ টাকা আয় হয়। এখনো কোনো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তিনি পায়নি। পাননি কোন অনুদান। নিজের অর্থ ব্যয় করে গড়ে তিনি গড়ে তুলেছেন মৌ-বন মধু খামার। ভবিষ্যতে সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে তিনি অনেক দূর যেতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।