[caption id="attachment_7962" align="alignleft" width="400"] ফাইল ছবি[/caption]
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী ড. ইরিনা ভট্টাচার্যের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। পাশাপাশি এ দু’জনের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ তথ্যও সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানতে চেয়েছে এনবিআর।
গত ৩ জানুয়ারি বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ও রাজস্ব আদায় প্রবণতা নিয়ে সিপিডি সংবাদ সম্মেলন করে। এর পরদিন ৪ জানুয়ারি সিআইসির সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে ব্যাংক হিসাব এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ তথ্য জানতে চেয়ে দুটি চিঠি দিয়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে দেবপ্রিয় ও তার স্ত্রী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের একক বা যৌথ নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব, মেয়াদি আমানত হিসাব (এফডিআর ও এসটিডি হিসাবসহ যেকোনো ধরনের বা নামের মেয়াদি আমানত হিসাব), যেকোনো ধরনের বা মেয়াদের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, ফরেন কারেন্সি একাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড, সঞ্চয়পত্র বা অন্য যেকোনো ধরনের সেভিংস ইন্সট্রুমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট স্কিম বা ডিপোজিট স্কিম বা অন্য যেকোনো ধরনের বা নামের হিসাব পরিচালিত বা রক্ষিত থাকলে ২০০৮ সালের ১ জুলাই থেকে হালনাগাদ বিবরণী ও ঋণের বিপরীতে রক্ষিত জামানতের বিবরণী সাত দিনের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি চিঠিতে পূর্বে ছিল কিন্তু এখন বন্ধ হয়ে গেছে এমন হিসাবের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া সিডিবিএলে পাঠানো চিঠিতে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী ড. ইরিনা ভট্টাচার্য বা তাদের পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের একক বা যৌথ নামে যেকোনো বিও হিসাব পরিচালিত বা রক্ষিত হয়ে থাকলে ওই হিসাবের ২০০৮ সালের ১ জুলাই থেকে হালনাগাদ বিবরণী জরুরি ভিত্তিতে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ১১৩(এফ) ধারার ক্ষমতাবলে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি চিঠিতে পূর্বে ছিল কিন্তু এখন বন্ধ হয়ে গেছে এমন বিও একাউন্টের তথ্য সাত দিনের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
ব্যাংকগুলো ও সিডিবিএল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য দিতে ব্যর্থ হলে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ১২৪(১) অনুযায়ী এককালীন ২৫ হাজার টাকা এবং পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। পাশাপাশি আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ১৬৪(সিসি) ধারা অনুযায়ী অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড আরোপে ফৌজদারি কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ জানুয়ারি ব্র্যাক ইন সেন্টারে সিপিডির সংবাদ সম্মেলনে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আদায় প্রবণতা অনেক কম। আর স্পেক্ট্রামের নিলামের অর্থও চলতি বছর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছর প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হবে। এছাড়া গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের যে তথ্য এনবিআর দেখিয়েছে তার চাইতে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়ে বলে উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সংবাদ সম্মেলনের পরদিনই চিঠি দেয়া হয় ব্যাংক হিসাব ও বিও হিসাব তলব করে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. দেবপ্রিয় বলেন, এটা রাজস্ব বোর্ড আইন অনুযায়ী যা প্রয়োজন তা অবশ্যই করবে। তবে এ অভিজ্ঞতা আমার নতুন নয়। ২০০৪-০৫ সালেও অর্থনীতির উপর বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমাকে হয়রানির মুখোমুখী হতে হয়।