বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আনন্দ শোভাযাত্রা, কেক কাটা, দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনসহ নানা কর্মসূচিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২১ উদযাপন করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ মার্চ) দিনব্যাপী যবিপ্রবিতে নানা অনুষ্ঠানে মেতে থাকেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। তবে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ১৭ মার্চের প্রথম প্রহরে ১০১টি মোমবাতি প্রজ্বালন, ১০১টি আতশবাজি প্রদর্শনী এবং রংবেরঙের ফানুস উড়ানোর মধ্য দিয়ে। এরপর সূর্যোদয়ক্ষণে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৯টায় যশোর শহরের বকুলতলায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
যবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে সকাল ১০টায় আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়। আনন্দ শোভাযাত্রাটি এসে শেষ হয় যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ক্ষণগণনার ঘড়ির সামনে জন্মদিনের গানের চিরায়ত সুরে জাতির পিতার ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১০১ পাউন্ডের কেক কাটা হয়। কেকটি জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাহারি নকশায় বিশেষভাবে তৈরি করা হয়।
জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সকাল সোয়া ১০টায় যবিপ্রবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এরপর যবিপ্রবির কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে দুপুর ১২টায় ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্স স্টাডিজের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনসমূহ তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে মুজিব জন্মশতবর্ষে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত একশটি গবেষণাপত্রের সারসংক্ষেপ ‘গবেষণায় অনন্য যবিপ্রবি’ শীর্ষক একটি সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব অনুষ্ঠানে যবিপ্রবির বিভিন্ন বিভাগের ও যবিপ্রবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসিজদে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া-মোনাজাত করা হয়। দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মো. আকরামুল ইসলাম। দোয়া-মোনাজাত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জগহাটি গ্রামের দুটি মাদ্রাসার প্রায় ২১৫ জন শিক্ষার্থীকে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ সকল কর্মসূচিতে যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ, ডিনস কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. নাসিম রেজা, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, চেয়ারম্যানবৃন্দ, দপ্তর প্রধানবৃন্দ, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি ও ওয়ান ব্যাংকের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ। ম্যাচে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।