উগ্র রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকায় স্বস্তি বাণিজ্যমেলায়

প্রকাশ: ২০১৬-০১-০৭ ১৪:৩৬:৩৭


melaআন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরুর পর ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে অংশগ্রহণকারী ও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছিল। কিন্তু দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ফলে তাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

গত বছর মেলা শুরুর পর বর্তমান সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তিতে ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ ডাকে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট। সেদিন সমাবেশ করতে না পেরে সারা দেশে অবরোধের ডাক দেন জোটনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যা মেলা শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন অব্যাহত ছিল। এতে বাণিজ্যমেলায় যে হারে দর্শনার্থী হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। তা ছাড়া যেসব দর্শনার্থী বাণিজ্যমেলায় এসেছিলেন, তারাও ছিলেন আতঙ্কের মধ্যে।

এবারের মেলায় প্রতিদিন এক লাখ দর্শনার্থী প্রত্যাশা করছে আয়োজন সংশ্লিষ্টরা। এবারও মেলা শুরুর পর ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থী ও অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছিল। তবে সেদিনের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কোনো ধরনের উশৃঙ্খল কর্মসূচি না দেয়ায় মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্ণধারদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি স্বস্তিতে রয়েছেন দর্শনার্থীরা।

আরএফএল রিগ্যাল ফার্নিচারের এরিয়া ম্যানেজার মো. ফায়েজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর অবরোধ, পেট্রোল বোমা হামলার আতঙ্কে ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। এবারও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছিল। কিন্তু ৫ জানুয়ারির শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে সকলের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে।’

গত কয়েকদিনের চেয়ে বুধবার (৬ জানুয়ারি) দর্শনার্থীদের আগমন ছিল বেশি। মেলায় পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে আগত বদিউজ্জামানের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘মেলা শুরু হয়েছে মাত্র কয়েকদিন। তবে আমরা ৫ জানুয়ারি নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলাম।’

আরেক দর্শনার্থী আবুল কালাম। উত্তরা থেকে তিনি পরিবারসহ মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে। তারা মানুষের ধারণা পরিবর্তন করতে পারে। আমরা সাধারণ মানুষ, চাই দেশে শান্তি বিরাজ করুক। কোনো রাজনৈতিক দলই যেন কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি না করে।’

ওয়েলবার্গ-এর কর্ণধার ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সদস্য মো. হাসানুজ্জামান হেলাল বলেন, ‘গত বছর অবরোধ-হরতালে সবার মধ্যে ভয় ছিল। এবারও অনেকটা আতঙ্ক ছিল, কিন্তু আজ (বুধবার) থেকে মেলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে দর্শনার্থীরা আসছে।’

‘গত বছর হরতাল-অবরোধ থাকলেও শুরুতে বেচাকেনা ভালো ছিল। কিন্তু এবার এখনো বেচাকেনা তেমন হয়নি। আশা করছি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকলে মেলা সফল হবে।’

১ জানুয়ারি শুক্রবার মাসব্যাপী ২১ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ মোট ২২টি দেশ অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রবেশ মূল্য বা টিকিট মূল্য ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য থাকছে ২০ টাকা করে।

এ বছর বাণিজ্যমেলায় ১৩টি ক্যাটাগরিতে মোট ৫৫৩টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, জেনারেল প্যাভিলিয়ন ১০টি, রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন ৩টি, ফরেন প্যাভিলিয়ন ৩৮টি অন্যতম। এ ছাড়া আছে প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৬টি, জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন ১৩টি, রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন ৬টি, ফুড স্টল ২৫টি ও রেস্টুরেন্ট ৫টি।

সানবিডি/ঢাকা/আহো