অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবেশ পদ সহকারি পরিচালককে অষ্টম গ্রেডে উন্নীত করাসহ তিনদফা দাবিতে ব্যাংকের প্রধান ফটক অবরোধ করে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় চত্ত্বরে ১০টা থেকে ১১ টাকা পর্যন্ত এক ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকেন সব কর্মীরা।
এসময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব ধরনের কার্যক্রমও বন্ধ ছিলো। বিশেষকরে তফসিলি ব্যাংকগুলোর লেনদেন, ট্রেজারি চালান ইস্যু, অটোমেটিক ক্লিযারিং হাউজিং, ন্যাশনাল প্যামেন্ট সুইচ সবই বন্ধ ছিলো এসময়। বাইরে থেকে কেউ এসেও এসময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারেনি।
বুধবার এক মুলতবি সভায় ‘গেট গ্যাদারিং’ শীর্ষক এ কর্মসূচী ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল। দাবি আদায়ে আগামী ১০ ও ১১ জানুয়ারি একই কর্মসূচী সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এবং ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি সকাল ১০ থেকে ১২ টা পর্যন্ত পালন করা হবে বলে জানান অফিসার্স ওয়েল ফেয়ার কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার সিদ্দিকী।
এরমধ্যে সরকার দাবি মেনে না নিলে ১৫ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা গণ ছুটিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলের সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান মোল্লা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা সহকারি পরিচালক পদটিকে অষ্টম গ্রেডে উন্নয়ন করা, গেজেটে বাংলাদেশ ব্যাংককে আলাদাভাবে উল্লেখ করা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ পদ নির্বাহী পরিচালক পদটিকে গ্রেড-১ এ উন্নীত করার দাবিতে এ আন্দোলন করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অভিযোগ অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে তাদের সুবিধা দেয়ার পরিবর্তে মর্যাদা হানি করা হয়েছে। এর আগে সব বেতন স্কেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারি পরিচালক ও বিসিএস ক্যাডার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একই স্কেল বা গ্রেডভুক্ত থাকলে অষ্টম বেতন স্কেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারি পরিচালক পদ এক ধাপ নামিয়ে নবম গ্রেড করা হয়েছে। আর বিসিএস ক্যাডার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অষ্টম গ্রেডে রাখা হয়েছে।
অষ্টম বেতন স্কেলের যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে রাষ্ট্রমালিকানাধীন অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক গেজেটে আলাদাভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশের পর ২২ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে করে এসব দাবি তুলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এরপর কালো ব্যাজ ধারন, প্রতিবাদ সমাবেশ, মানব বন্ধনের মত কর্মসূচী পালন করেছেন কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবারের কর্মবিরতি চলাকালীন ছিদ্দিকুর রহমান মোল্লা বলেন,‘গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন আমাদের দাবি দাওয়া পুরণের দায়িত্ব তিনি নিচ্ছেন। কিন্তু আমরা এতে সন্তুষ্ট নই। আমরা আর কথায় বিশ্বাস করতে চাই না। বাস্তবায়ন চাই।’
তিনি বলেন, ‘অর্থসচিব জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকে কি হচ্ছে ? আজকে উনার (অর্থ সচিবের চোখ কান খুলেছে, কেবল জানতে শুনতে পারছেন। এতদিন উনি কোনো কিছু বুঝতে পারেননি। আমরা নায্য দাবিতে অবস্থান নিয়েছি, এটা মেনে না নেয়া হলে আন্দোলন আরও দূর্বার হবে।’
সানবিডি/ঢাকা/আহো