রংপুরে ৩৩টি ওয়ার্ডের নগরবাসী মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মশারি,কয়েল ছাড়া দিনেও ঘরে থানা যায় না। রংপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের জন্য ঔষধ ছিটানো হলেও তা কাজে আসছে না। নগরের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া শ্যামা সুন্দরী খাল, ক্যাডি খাল পরিস্কার ও সংস্কার না করায় মশা দিন দিন বাড়ছে।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা জানান, আয়োতনের দিক থেকে অন্যান্ন সিটি করপোরেশনের দিক থেকে রংপুর সিটি কপোরেশন অন্যতম। ২০৭ বর্গকিলোমিটারের এই সিটি করপোরেশন ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ।
মাত্র ১০টি ফগার মেশিন দিয়ে প্রতি ওয়ার্ডে ৬ দিন করে বিভিন্ন ড্রেন ও ঝোঁপঝাড়ে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আরও ৬টি ফগার মেশিন ক্রয়ের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। দুই মাস মশার উপদ্রব থাকবে। এ সময় পর্যন্ত কার্যক্রম চালানো হবে। এডিস মশার বিস্তার রোধে রসিক স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর প্রস্তাবনার রয়েছে। খাল পুনঃখনন এবং সংস্কারের জন্য সরকার প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
মেয়র মোস্তফা বলেন, ঐত্যিবাহি শ্যামাসুন্দরী খালের স্বরূপ ফিরিয়ে এনে এটিকে দখল এবং দূষন মুক্ত করে হাতিরঝিলের আদলে এর সৌর্ন্দয বর্দ্ধন করা হবে। রংপুর বাসীকে উপহার দেয়া হবে একটি সুন্দর নগরী।
রংপুর সিটি কর্পোরেশন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানান শ্যামাসুন্দরী খালটিতে ৪টি ব্রিজ পুন:নির্মাণ করা হচ্ছে । এর ফলে স্বাভাবিক ভাবে পানি প্রবাহ বন্ধ রয়েছে । তাই মশামাছি বেড়েছে।নগরীর অভিজাত এলাকাগুলোতে সিটি করপোরেশন থেকে মাত্র ১০টি ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধন কার্যক্রম শুরু হলেও প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছায়নি এ সুবিধা। আমরা ফগার মেশিন বরাদ্দের জন্য আসারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছি। ফগার মেশিন আসলে মশা নিধনের কার্যক্রম আরো জোরদার হবে বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, নগরীর অধিকাংশ এলাকাতেই এখন পর্যন্ত মশা নিধন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তবে নগর কর্তৃপক্ষ বলছে, মশা নিধনে কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত রয়েছে।
রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম দফায় নগরীতে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১০ মার্চ থেকে আবারও মশা নিধন শুরু হয়েছে। ১০টি ফগার মেশিন দিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বাসবভনসহ বিভিন্ন ড্রেনে মশা নিধন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
নগরীর শালবন এলাকার গৃহবধু সম্পা হোসেন জানান, শুধু ড্রেনেই মশা মারা দেখি। অন্য জায়গায় চোখে পড়ে না। দিন-রাত সব সময় মশা কামড় দেয়। সন্ধ্যা হলেই মশার কামড়ে ঘওে থাকা যায় না। মশা নিধনে সিটি করপোরেশন থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা কাজে আসছে না। গত বছর করোনার সময় বিভিন্ন ড্রেনে স্প্রে করা চোখে পড়লেও এখন পর্যন্ত আর দেখা যায়নি।
নগরীর মিস্ত্রীপাড়া এলাকার সরকারী চাকুরীজীবী তামান্না তাবাসুম তমা জানান, মশা মারতে কয়েল, স্প্রে, বৈদ্যুতিক ব্যাট সবই কিনেছি। কিন্তু কিছুতেই মশার কামড় থেকে নিস্তার পাচ্ছি না। রান্নাঘরে কাজ করতে গেলেও মশা পিছু ছাড়ে না।
রংপুর সিটি করপোরেশনের সহকারী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, কেবল ফগার মেশিনের ধোঁয়া দিয়ে মশা নিধন পুরোপুরি হয় না। মেয়রের নির্দেশে এবার হ্যান্ড স্প্রের সাহায্যে কীটনাশক ছিটিয়ে আধাঘণ্টা বা এক ঘণ্টা পর ফগার মেশিনের ধোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ঝোঁপঝাড় ছাড়া প্রায় ৫০ শতাংশ মশা নিধন হয়।