ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদের বড় অংশ বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বিবেচনা করছে। ফলে ইউরোপের সঙ্গে চীনের বহু প্রতীক্ষিত বাণিজ্য চুক্তি ভেস্তে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
ইইউ’র প্রতিনিধিদের একটি বড় অংশ জানিয়েছে, চীন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা এই চুক্তিকে সমর্থন করবে না। খবর এএনআইয়ের
ইপিপির চেয়ারম্যান মনফ্রেড ওয়েবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একটি ভিডিওতে বলেছেন, চীন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের চুপ করিয়ে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কারণ তারা চীনে উইঘুরদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছে।
ইউরোপের সঙ্গে চীনের এই বাণিজ্য চুক্তির জন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন, পরের বছর এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে উইঘুর নিপীড়নের কারণে চীনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা। উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে চারটি রাজ্যের আঞ্চলিক ও দলীয় প্রতিনিধি, জিনজিয়াং প্রদেশের একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে ইইউ তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করে।
এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চীন। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে প্রতিশোধমূলক এই পাল্টা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয় দেশটি।
উইঘুর নিপীড়নের ঘটনায় ইউরোপের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীনের পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ইইউ। এটিকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা।
মঙ্গলবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষত জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা পুনরায় জানান। চীনের এ ধরনের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানান তারা।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীদের চাপের মধ্যেও চীন জিনজিয়াংয়ে জোরপূর্বক শ্রম ও গণহত্যা উভয় অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বাক্ষরিত চুক্তি ইউরোপের পক্ষে বিপজ্জনক পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
চীনা প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিং এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর থেকে জোরপূর্বক শ্রম এবং সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হংকংয়ে গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।
/এ এ