ভুয়া টিআইএনধারীদের শাস্তির আওতায় আনছে এনবিআর

প্রকাশ: ২০১৬-০১-০৮ ২২:১৫:০৪


e-tin-ভুয়া টিআইএনধারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গত মঙ্গলবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের কাছে এ নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠান অর্থমন্ত্রী। চিঠিতে আরো বলা হয়, যে সব করদাতা এখনো রিটার্ন দাখিল করেনি বা রিটার্ন দাখিলে সময় চেয়ে আবেদন করেনি তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রত্যেক কর অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি আয়ের ২০০ জন করদাতার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলের কর্মকর্তারা যোগাযোগ করবে। তাদের রিটার্নসংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সর্বোচ্চ আয়ের এসব করদাতা এবং তার পরিবারের সদস্যরা রিটার্ন দাখিল করেছে কিনা, রিটার্ন দাখিল করলে সেখানে প্রকৃত তথ্য দিয়েছে কিনা। রিটার্ন দাখিল না করলে কত দিনে দাখিল করবে তা জানতে হবে। এসব করদাতা বিদেশে কোনো ব্যবসা করে থাকলে সে ক্ষেত্রে লেনদেনে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী।

করদাতাদের কার কি মূল্যের বিলাসবহুল গাড়ি আছে তা রিটার্নে উল্লেখ করেছে কিনা তা দেখার কথা বলা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে। একই সঙ্গে বাড়ির মালিকরা কত টাকার বাড়িভাড়া পান তার তথ্যও যাচাইয়ের নির্দেশ দেয়া হয়। নতুন করদাতাদের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ আছে, এসব করদাতা ইটিআইএন গ্রহণ করেছে। তারা যাতে স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজস্ব প্রদানে উৎসাহিত হয় এ বিষয়ে রাজস্ব বোর্ডকে ভূমিকা রাখতে হবে। এ জন্য উৎসাহমূলক কার্যক্রম সংবাদমাধ্যমে প্রচার করতে হবে। প্রচারণামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। কর কমিশনারদের এ বিষয়ে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। ইটিআইএনধারী করদাতাদের করযোগ্য আয় না থাকলেও তাদের নামে আয়কর ফাইল খুলতে হবে।
উৎসে কর কর্তন কার্যক্রম জোরদারে নির্দেশ দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, উৎসে কর কর্তন কার্যক্রম গতিশীলে ‘টিডিএস মনিটরিং টিম’ গঠন করতে হবে। এ টিমের আহ্বায়ক হিসেবে এনবিআর সদস্যদের দায়িত্ব প্রদানে নির্দেশ দেয়া হয়েছে চিঠিতে।
অর্থমন্ত্রী চিঠিতে উল্লেখ করেন, যেসব কর অঞ্চলে আয়কর আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে সেসব কর অঞ্চলের কর কমিশনারদের সঙ্গে এনবিআর সদস্যরা পৃথক বৈঠক করে আদায় কেন কম হয়েছে সে বিষয়ে জবাবদিহিতা করবে। ভবিষ্যতে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর কমিশনারকে। রাজস্ব আদায় কার্যক্রম জোরদারে কর কমিশনার, উপ-কর কমিশনারহ সব মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।

অর্থমন্ত্রী রাজস্ব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে গতিশীলে গুরুত্ব দিয়ে চিঠিতে জানান, সকল রাজস্ব মামলা এই অর্থবছরে নিষ্পত্তি সম্ভব না হলেও অধিকাংশ মামলা যেন নিষ্পত্তি হয় সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষভাবে বড় অঙ্কের রাজস্ব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি আইনের আওতায় কাজ করতে হবে। এ জন্য এনবিআর কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ীদের উৎসাহিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

করদাতার সংখ্যা পাঁচ লাখে উন্নীত করতে অর্থমন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে চিঠিতে উল্লেখ করেন, যেসব এলাকায় জনসমাগম বেশি সেখানে হঠাৎ পরিদর্শন করে ইটিআইএন গ্রহণ করেছে কিনা যাচাই করতে হবে। যেসব করদাতা ইটিআইএন গ্রহণ করেনি তাদের তাৎক্ষণিক ইটিআইএন প্রদান করতে হবে। জরিপ কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে।
রাজস্ব আদায়ের অন্যতম খাত মোবাইল ফোন ও সিগারেট থেকে আদায় বাড়াতে মনোযোগী হতে হবে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।