‘হিউমুলাস লুপুলাস’। একটি গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম। বিশ্বের সবচেয়ে দামি সবজির গাছ এটি। এক কেজি লুপুলাস সবজির দাম প্রায় এক লাখ রুপি। বাজারে চাহিদা না থাকায় বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এই সবজির চাষ হয় না। ইউরোপ এবং আমেরিকায় ব্যাপক হারে এ সবজির উৎপাদন হয়ে থাকে।
হিউমুলাস লুপুলাস একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। সাম্প্রতি ভারতের বিহারের এক ব্যক্তি তার জমিতে এ সবজির চাষ করেন। বিহারের ওই ব্যক্তির নাম অমরেশ সিংহ। ভারতে তিনিই প্রথম এই সবজির চাষ করছেন। আর সবজিটির নাম দিয়েছেন ‘হপ শুটস’। বিহারের আওরঙ্গাবাদে আড়াই লাখ রুপি খরচে প্রায় পাঁচ কাঠা জমিতে তিনি এই সবজির চাষ করেছেন।
‘হপ শুটস’ দেখতে অনেকটা অ্যাসপারাগাসের মতো। খেতেও অনেকটা সে রকমই। অ্যাসপারাগাস যেভাবে রান্না করে খেতে হয় এই সবজিটিও সেভাবেই খাওয়া যায়। এছাড়া এর আরও অনেক ব্যবহার রয়েছে।
হিউমুলাস লুপুলাস গাছের ফুল ‘হপ’ নামে পরিচিত। এই ফুল দিয়ে মদ তৈরি করা হয়। কোনও পানীয়তে সুগন্ধী দেয়ার কাজেও লাগে এই ফুল। হপ ফুল দিয়ে তৈরি মদ সহজে নষ্ট হয় না।
মূলত পানীয় তৈরিতেই প্রথম এই গাছের ব্যবহার সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তারপর ধীরে ধীরে এর ওষধিগুণ সামনে আসতে শুরু করে।
জানা গেছে, সবজিটি প্রথম চাষ হয় ৭৩৬ সালে জার্মানিতে। তবে প্রথম ‘হপ শুটস’ পানীয়তে ব্যবহার করা হয় ১০৭৯ সালে। পরবর্তী কালে হপ শুটস-এর আরও অনেক ওষধিগুণের কথা সামনে আসে।
এর বিশেষ অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল গুণ রয়েছে। টিবি রোগীদের ওষুধ তৈরিতে, ক্যানসারের চিকিৎসায় কাজে লাগে হপ শুটস। এসব কারণেই হপ শুটস-এর এমন আকাশছোঁয়া দাম।
হপ শুটস-এর মধ্যে থাকা অ্যাসিড ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলোকে নষ্ট করে দেয়। ক্যানসারের ওষুধ তৈরিতে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই হপ শুটস নিয়ে বহু গবেষণাও চলছে।
এই গাছটি মূলত ঝোপ প্রকৃতির। ফুলগুলো সবুজ রঙের আর খুব নরম। তাই খুব সাবধানে গাছ থেকে তুলতে হয়। তোলার সময় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা আর বিক্রির যোগ্য থাকে না।
তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা