উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট ডি-৮-এর দশম শীর্ষ সম্মেলনে সংস্থার সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী দুই বছর তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন। বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) জোটের বৈঠকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও সংস্থার বর্তমান সভাপতি রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ডি-৮-এর দশম শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট উদ্বোধনী ভাষণ দেন এবং এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সভাপতিত্বের দায়িত্ব তুলে দেন।
শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডি-৮-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে এই সংগঠনের জন্য তার সবসময়ই একটি বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। ১৯৯৭ সালে ডি-৮ প্রতিষ্ঠার সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইস্তাম্বুলে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়ও শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ার জন্য এবং জনগণ এবং পরবর্তী প্রজন্মের শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনের সাধারণ লক্ষ্যে একত্রে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন,‘ বিশ্ব এখন একটি জটিল সময় পার করছে। কোভিড-১৯ মহামারীটি বিশ্ব অর্থনীতিতে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। উন্নত ভবিষ্যত গড়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা এখন আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “সম্মেলনে প্রযুক্তি, কৃষি, ব্যবসা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বিস্তৃত বিষয়কে আলোচনায় এনে আমরা প্রায় তিন ঘন্টা যাবত ডি-৮-এর বিভিন্ন বিভিন্ন উদ্যোগের কথা শুনেছি। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের সমর্থন এবং উৎসাহের সাথে সাথে ডি -৮ আগামী দিনে আরও সমৃদ্ধ হবে এবং আমরা আরও বেশি কিছু অর্জন করতে সক্ষম হব।”
তিনি বলেন, “আসুন আমরা ডি -৮ কে আরও গতিশীল, আরও দূরদর্শী, আরও প্রত্যাশিত গোষ্ঠীতে রূপান্তর করি। আসুন আমরা ডি -৮ কে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাই, আরও ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সম্পর্কের জন্য কাজ করি। আসুন আমাদের জনগণের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনের আমাদের সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য একসাথে কাজ করি।”
শেখ হাসিনা বলেন, আমার উদ্বোধনী বক্তব্যে, আমি উল্লেখ করেছি যে ডি -৮ এখন সমন্বয় তৈরির মাধ্যমে তার অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমি উল্লেখ করে খুশি যে সমস্ত বিশিষ্ট রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধানও একই মত পোষণ করেন। এই সাধারণ অবস্থানটি সামগ্রিকভাবে সংস্থার উচ্চাভিলাষ পূরণ করতে আমাদের সহায়তা করবে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে, আপনাদের বক্তব্য এবং পরামর্শগুলি শুনে আমি আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী বোধ করছি যে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে, ডি -৮ সদস্য দেশগুলির এক বিলিয়ন প্লাস লোকের জন্য একটি ভাল আগামীকাল তৈরি করতে পারবো।
উন্নয়নশীল-৮ নামে পরিচিত ডি-৮ অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য আটটি উন্নয়নশীল মুসলিম-প্রধান দেশ- বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের সমন্বয়ে গঠিত হয়।
ডি-৮-এর সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা, ডি-৮ মহাসচিব প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি এই সম্মেলনে যোগ দেন।
/এ এ