‘লু হাওয়া’য় রাজশাহীর ২৮ হেক্টর জমির ধান পুড়ে গেছে। প্রকৃতিতে হঠাৎ গরম বাতাসকে আবহাওয়াবিদরা বলেন ‘লু হাওয়া’। কৃষিবিদেরা একে‘হিটশক’ও বলে থাকেন। তীব্র তাপমাত্রায় ধানগাছ শুকিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকেই‘হিটশক’ বলা হয়ে থাকে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানচাষ হয়েছে। গত রবিবার বিকালে লু হাওয়ায় ২৮ হেক্টর জমির ধানগাছ পুড়েছে। হেক্টর প্রতি ৬ মেট্রিক টন ধান হিসেবে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬৮ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ জানায়, লু হাওয়ায় রাজশাহীর পবা, তানোর ও গোদাগাড়ী এই তিন উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. মো. ফজলুল ইসলাম বলেন, এবার দীর্ঘ সময় বৃষ্টির দেখা নেই। আবহাওয়া অত্যন্ত রুক্ষ। ৪ এপ্রিল সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি ছাড়াই ঝড় শুরু হয়। সেদিন বাতাস ছিল অতিরিক্ত গরম। আদ্রতা ছিল শূন্যের কাছাকাছি। ফলে সেদিন যেসব ধানের শীষ বের হয়েছিল সেগুলোর ফুল হিটশক হয়ে ঝরে গেছে। লু হাওয়ার কারণেই এটা হয়েছে। বৃষ্টি হলে এটা হত না।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কেজেএম আব্দুল আউয়াল বলেন, ৪ এপ্রিল ঘন্টাব্যাপী বৃষ্টিহীন ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত হয়েছে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় ও বাতাসে আর্দ্রতা না থাকায় বোরো ধানের ক্ষেতের শীষ মরে গেছে।
তিনি বলেন, জলীয় বাষ্প কম থাকলে আমরা যে তাপমাত্রা রেকর্ড করি না কেন, এর চেয়ে অনেক বেশি তাপমাত্রা অনুভূত হবে। তখন মনে হয় লু-হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সেদিন মূলত এ ব্যাপারটা ঘটেছিল। তিনি জানান, লু হাওয়ায় এখন পর্যন্ত রাজশাহীর ২৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান হিটশকে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এটি মোট আবাদ করা জমির ধানের শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ। তবে হেক্টর প্রতি ৬ মেট্রিকটন ধান হিসেবে ১৬৮ মেট্রিক টন ধানের ক্ষতি হয়েছে।