সৌদি রাজতন্ত্রে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রিন্সের লেখা দুটো চিঠি সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে জ্যেষ্ঠ সৌদি রাজপুত্র বলে চিহ্নিত করেছে গার্ডিয়ান। আরবি ভাষায় লেখা ওই চিঠি দুটির মূল বক্তব্য ছিল সৌদি রাজতন্ত্রে পরিবর্তন।
চিঠির লেখক নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের পরিচয় গোপন রাখলেও আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তিনি সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ বিন সৌদের নাতি। আর বর্তমান সৌদি বাদশা সালমান (৭৯) হলেন আব্দুল আজিজের পুত্র। বাদশা সালমানের ডজন খানেক সন্তানাদি রয়েছে বলে জানা যায়।
গত জানুয়ারিতে সিংহাসনে বসার পর থেকে বাদশাহ সালমানের শাসন নিয়ে সমালোচনামুখর এই প্রিন্স। এছাড়া সালমানের পুত্র মোহাম্মদ বিন সালমান (৩০) উপ যুবরাজ এবং পরবর্তী সিংহাসনাধিকারী হওয়ারও তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি।
দ্য গার্ডিয়ান দাবি করেছে, ১৯৬৪ সালে প্রাসাদ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাদশা ফয়সাল বাদশা সৌদকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। তবে এই চিঠি দুটি সেরকম কিছু নয়।
ওই প্রিন্স গার্ডিয়ানের কাছে বলেছেন, বাদশাহর শারীরিক অবস্থা এখন খুব ভালো নেই। কার্যত তার ছেলেই (মোহাম্মদ বিন সালমান) এখন সৌদি আরবের বাদশাহ।
প্রিন্স আরও বলেন, ‘খুব শিগগিরই আমার চার থেকে পাঁচজন চাচা এই চিঠি নিয়ে আলোচনায় মিলিত হবেন। তারা তাদের বিপুল সংখ্যক ভাতিজাকে নিয়ে একটা পরিকল্পনা করবেন এবং এটি একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। দ্বিতীয় প্রজন্মের অনেকেই অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
সাধারণ জনগণের প্রত্যাশাকেও যুবরাজ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে চিঠিতে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, জনগণ এবং উপজাতীয় নেতারা চায় তারা কিছু করুন। নইলে দেশ অতি শিগগিরিই মহা দুর্যোগের পথে চলে যাবে।
চিঠিতে প্রিন্স তার আত্মীয়স্বজনদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই বাদশাহর বিরুদ্ধে সমন্বিত প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি চিঠিতে লিখেছেন, ‘সবচেয়ে বয়স্ক এবং যোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের দায়িত্ব দিতে হবে, নতুন বাদশাহ এবং নতুন যুবরাজকে জায়গা করে দিতে হবে। নতুন পদও সৃষ্টি করতে হবে।’
তিনি লিখেছেন, ‘আমরা ইবনে সৌদের পুত্রদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ বন্দর এবং বয়োকনিষ্ঠ মুকরিনকে অনুরোধ করেছি তারা যেন পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের নিয়ে এই পরিস্থিতি তদন্তে একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন। এবং দেশ রক্ষা, গুরুত্ব পদে পরিবর্তন এবং যেকোনো প্রজন্ম থেকে দক্ষ জনকে বেছে দায়িত্ব অর্পণ নিশ্চিত করার পথ অনুসন্ধান করেন।’