জিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের কর্মকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়ার মানদণ্ড পূরণ করতে পারে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
গত সোমবার সংস্থাটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরে ওই অঞ্চলে ব্যাপক নির্যাতনের জন্য সমন্বিত তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উইঘুর, কাজাখ ও কিরগিজ মুসলিমদের লক্ষ্য করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সেখানে ছিল। অবশ্য চীনের পক্ষ থেকে জিনজিয়াং ঘিরে এ ধরনের সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্ট্যানফোর্ড ল স্কুলের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও কনফ্লিক্ট রেজল্যুশন ক্লিনিকের সহায়তায় ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একটি আইনি কাঠামোও দাঁড় করানো হয়েছে, যাতে জিনজিয়াং ঘিরে বেইজিংয়ের কর্মকাণ্ডকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মানদণ্ডে ফেলা যায়। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ওই মানদণ্ড ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও অধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ২০১৭ সাল থেকে জিনজিয়াংয়ে ১০ লাখের বেশি উইঘুরসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে বন্দী করে রেখেছে চীন।
গত ডিসেম্বরে আইসিসি জানায়, গণবন্দীর বিষয়টি তদন্ত করা হবে না। কারণ, অপরাধের যে অভিযোগ উঠেছে, তা চীনের অভ্যন্তরে ঘটেছে এবং চীন আদালতের পক্ষ নয়।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা আইসিসিতে যোগদান করবে না। কারণ, এর মর্যাদা জাতীয় সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ও এর প্রক্রিয়া রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের জন্য উন্মুক্ত।
তবে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় সরকারের আইনজীবীরা একক বা যৌথভাবে আইসিসির মতো প্রাথমিক তদন্ত চালাতে পারেন এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন।
গত মার্চ মাসে জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর জবাবে চীনও দেশগুলোর কিছু আইনজীবী, গবেষক ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়।