প্রচণ্ড খরায় গাছের গোড়ার মাটি শুকিয়ে আমগুলো ঝরে পড়ছে। আর সেই আম এখন বিক্রি করা হচ্ছে মাত্র দুই টাকা কেজি দরে। এভাবে প্রতিদিনই চারঘাট-বাঘার আমবাগানগুলোতে ঝরছে মণ মণ আমের গুটি। এতেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন আমের সঙ্গে জড়িত চাষি ও মালিকরা।
প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে দাবি চাষি ও কৃষকদের।
সরেজমিন চারঘাট-বাঘার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাগানে ব্যাপক আমের গুটি ঝুলছে। গুটিগুলো টিকে থাকলে চলতি বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা এখানকার চাষি, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকাদের।
তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত পাঁচ মাস ধরে এ অঞ্চলে বৃষ্টি হয়নি। এতে করে আমের গুটি টিকিয়ে রাখা দায়। দ্রুত সময়ে মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টি দেখা না গেলে আমে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি তাদের।
চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি গ্রামের আমচাষি ও বাগানমালিক বাহাদুর রহমান বলেন, চলতি বছরে গাছে ব্যাপক আমের গুটি রয়েছে। তবে প্রচণ্ড খরার কারণে আমবাগানগুলোর মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। আর এতে মাটিতে রস না থাকায় আমগাছে ঝুলে থাকা গুটিগুলো ঝরে পড়ছে।
প্রতিদিন মণ মণ আম ঝরছে বাগান থেকে। খুব শিগগির প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টির আগমন না ঘটলে চারঘাট-বাঘার আমচাষিদের চরম লোকসান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলার রায়পুর এলাকার আমচাষি শামসুল হক বলেন, বৈরী আবহাওয়া না হলে এ বছর যে পরিমাণ আমের গুটি এসেছে, তাতে আমে ব্যাপক লাভবান হওয়ার কথা। তবে বর্তমানে যে পরিমাণ আমের গুটি ঝরছে, তাতে লাভের চেয়ে লোকসানের আশঙ্কায় বেশি।
বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ এলাকার বাগানমালিক মনসুর রহমান বলেন, বৃষ্টির দেখা না পেলে আমে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমগাছের গোড়ার মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়ছে। বালতি করে পানি দিয়ে তো গাছের গোড়ার মাটি ভেজানো সম্ভব নয়। তার পরও চেষ্টা করছি আম গুটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য।
চারঘাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই এ অঞ্চলে বৃষ্টি নেই। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তাপমাত্রাও দিন দিন বাড়ছে। অতিরিক্ত খরার কারণে কিছুটা আমের গুটি ঝরছে।
তিনি আরো বলেন, বাগানের মাটি শুকিয়ে গেলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আচাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি আমাদের পরামর্শ নিয়ে চাষিরা লাভবান হবেন।