করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবং লকডাউনে অসহায় ও ভাসমান মানুষদের জন্য মাসব্যাপী নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীতে মানবিক ইফতারের আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিদিন শতাধিক মানুষের হাতে ইফতার তুলে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
চৌমুহনীর রেলস্টেশনে প্রতিদিন ইফতারের সময় সামাজিক দুরত্ব রক্ষা করে স্বেচ্ছাব্রতিদের সংগঠন "আমরা গোলাপ "এই কর্মসূচীর আয়োজন করে। আর এতে স্বেচ্ছাসেবী সহযোগীতায় রয়েছে “সার্ভিস ফর হিউম্যান বিয়িং অর্গানাইজেশন (মানুষের জন্য সেবা)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- স্বেচ্ছাসেবীদের প্রাণ এবং ইফতার আয়োজনের সমন্বয়ক প্রথমে নিজ উদ্যোগে ইফতার সরবরাহ করলেও ক্রমেই এই উদ্যোগে সামিল হচ্ছেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন বসার স্থানকে জীবানুমুক্ত করে খাবার গ্রহীতাদের মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই আয়োজন অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনার সংক্রমনের শুরুর দিকে কর্মহীন হয়ে পড়া ভাসমান মানুষদের জন্য স্থানীয় সমাজকর্মী শাহেদ মুনীম ফয়সাল লঙ্গরখানা চালু করেন। তাঁর এ খাবারের ব্যবস্থাপনার বিষয়টি নোয়াখালীর গন্ডি ছাড়িয়ে দেশে -বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিলো। তৎকালীন বেগমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম ওমর ফারুক বাদশা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আলম ভাসমান লঙ্গরখানাটি চালিয়ে নিতে সর্বাত্মক সাহায্য ও সহযোগীতা করেন। সে সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছিলো এ মহতী কার্যক্রমের পাশে। এভাবে ১’শ ৭ দিন ব্যাপী অসহায় মানুষদের খাবার সরবরাহ করা হয়েছিলো লঙ্গরখানা থেকে।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভাসমান মানুষদের মুখে সামান্য খাবার তুলে দিতে ইফতারের আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রতিদিন ইফতারের মেন্যুতে বুট, পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, খেজুর ও মুড়ি রাখা হয়েছে। এতে জনপ্রতি খরছ হয় ৩২ টাকা। এক’শ জনের জন্য ৩ হাজার ২০০টাকা খরছ হয়।
যে কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই অর্থ অথবা ইফতার সরবরাহের মাধ্যমে অসহায় এই মানুষগুলোকে ইফতার করাতে পারে। তাহলে পুরো রমজানে কর্মসূচীটি অব্যাহত রাখার সুযোগ রয়েছে এমনটি জানিয়েছেন কর্মসূচীর সমন্বয়ক শাহেদ মুনীম ফয়সল। বিকাশের মাধ্যমে অথবা নিজে ইফতার কিনে দিতে পারেন যে কেউই। তিনি এজন্য সবার সহযোগীতা কামনা করেন।