ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। আমরা সবাই জানি। কিন্তু জেনেও জানি না, বুঝেও বুঝি না। মানে সব জায়গাতেই এই সাইনবোর্ডটা লাগানো থাকে। কিন্তু পড়ে আমরা বিজ্ঞের মতো ব্যাপারটা নিয়ে দু মিনিট ভেবে আবার নতুন উদ্যমে আর একটা সিগারেট ধরাতে থাকি। আমি-আপনি বললেও এটা সত্যি, আর না বললেও ধ্রুব সত্যি। কারণ সিগারেট খাওয়ার ফলে ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, হার্টের রোগের মতো ভয়ংকর ব্যাধি আমাদের জীবনে থাবা বসাতে পারে জেনেও আমরা এর মায়া থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারি না। আর পারি না বলেই আমরা চেষ্টাও করি না। হোক বা না হোক, নিদেনপক্ষে চেষ্টাটা শুরু তো করা যেতে পারে-
১) আপনি হয়তো একদিনে ১২-১৫ টা সিগারেট খান। আর এমতাবস্থায় আপনাকে পুরোটা ছেড়ে দিতে বললে আপনার পক্ষে তা সম্ভব নয়। তাই চেষ্টা করুন আস্তে আস্তে সিগারেটের সংখ্যাটা কমিয়ে আনতে। দিনে দশটা খেলে কমিয়ে আনুন সাতটায়, পনেরোটা খেলে আজ থেকেই এগারোটা খাওয়ার দৃঢ় সংকল্প নিন। তাহলে দেখবেন একদিন এমন আসবে, যে সারা দিনে আপনি হয়তো একটা সিগারেট খেয়ে দিব্যি রয়েছেন।
২) পুরোপুরি যদি নিজেকে ধূমপান থেকে মুক্ত রাখতে চান , তাহলে নিকোটিনের স্বাদ আর গন্ধকে কাছে ঘেঁষতে দেবেন না। তাই আপনার ঘরে ফার্নিচারের নীচে বা চারপাশে অল্প বেকিং সোডা ছড়িয়ে রাখতে পারেন। আশেপাশে কেউ সিগারেট খেলেও নাকে আর নিকোটিনের গন্ধ আসবে না।
৩) সিগারেট ছাড়ার আর একটা ভালো বিকল্প চুইংগাম। মুখে চুইংগাম, ললিপাপ বা লজেন্স রাখুন। এতে সবসময় চিবোনোর একটা অনুভূতি থাকবে। সিগারেটের দিকে মন ছুক ছুক করবে না।
৪) যদি ধূমপান ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকেন, তাহেল প্রথমেই সেইসব জায়গায় যাওয়া এক্কেবারে বন্ধ করে দিন যেখানে আপনি একসময় আয়েশ করে সুখটান দিতেন। বা প্রথম যেখানে লুকিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সিগারেটে টান দিয়েছিলেন তার দশহাতের মধ্যে পা রাখবেন না।
৫) সিগারেট না খেয়ে মনটা অশান্ত হয়ে উঠছে? কুছ পরোয়া নেহি। পছন্দসই গান চালিয়ে মনটাকে অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন।
৬) ঘরে রুম ফ্রেশনার বা অন্য সুগন্ধী রাখুন। আপনার সিগারেট ছাড়ার সহায়ক হবে।
৭) সকালে ব্রেকফাস্টের পর, দুপুরে লাঞ্চের পর সিগারেট খাওয়ার অভ্যেস থাকলে আস্তে আস্তে ছাড়ুন। চাইলে ওই সময়ে নিজেকে অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত রাখুন। আর যদি সিগারেটের ধোঁওয়া ছাড়া আপনি কফির কাপের দিকে হাত না বাড়ান, তাহলে সিগারেটের সঙ্গে সঙ্গে কফিটাও বাদ দিয়ে দিন জীবন থেকে। চায়ের পেয়ালাতেই আপাতত আপনাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
৮) অ্যাশ ট্রে, লাইটার, দেশলাই বাক্স, সিগারেটের প্যাকেট নিজের চৌহদ্দি থেকে আস্তে আস্তে সরিয়ে ফেলুন। এগুলো চোখের সামনে থাকলেই সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছেটাকে আপনি নিয়ন্ত্রণ না-ও করতে পারেন।
৯) কাজের ফাঁকে ফাঁকে সিগারেট খাওয়ার অভ্যেস থাকলে তা দ্রুত বদলে ফেলুন। না হলে যে একদিন মারণরোগের প্রকোপে আপনার জীবনটাই পালটে যাবে। কাজের ফাঁকে ফল বা কোনও স্ন্যাকস খেতে পারেন। খেতে ইচ্ছে না করলে খানিকক্ষণ কম্পিউটার গেম খেলুন আর তাতেও যদি বসের চোখরাঙানি থাকে, তাহলে অগত্যা ফোনেই না হয় কথা বলে সময় কাটান। মন থেকে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছেটা আস্তে আস্তে চলে যাবে।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ