মহামারি কোভিডের এই সময়ে সকল ডিজিটাল সেবা ঘরে বসে নিতে ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনতে পারবেন দেশের প্রধান প্রধান বাণিজ্যিক ব্যাংকের গ্রাহকেরা। এর জন্য গ্রাহকদের বাড়তি কোনো খরচ করতে হবে না।
এ ছাড়া বাংলাদেশে ইস্যুকৃত যেকোনো ভিসা ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে বিনা খরচে ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা যোগ করার সুযোগ তো রয়েছেই। কোভিডের এই সময়ে সেবা দুটি কোটি গ্রাহককে আর্থিক লেনদেনের স্বাধীনতা দিয়েছে।
দেশের দ্রুততম বর্ধনশীল মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ গ্রাহকের সুবিধার কথা চিন্তা করে খুবই দ্রুততার সঙ্গে ১৩টি ব্যাংকের সঙ্গে সেবাটি চালু করেছে।
বর্তমানে মিডল্যান্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে সেবাটি চালু করেছে। ব্যাংকগুলোর গ্রাহকেরা চাইলেই যেকোনো সময় তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে মুহূর্তে ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনতে পারবেন।
মাত্র দুই বছরের মধ্যে এতগুলো বড় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করার ঘটনা দেশের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের ক্ষেত্রে খুবই বিরল। খুব শিগগিরই আরও বেশ কিছু ব্যাংকের সঙ্গে ‘নগদ’ এমন চুক্তি করতে যাচ্ছে। ফলে সেবার কলেবর আরও বৃদ্ধি পাবে।
এ বিষয়ে ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, মানুষের জীবনকে সহজ করতে শুরু থেকেই ‘নগদ’ কাজ করে যাচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ‘নগদ’ ওয়ালেটে বিনা খরচে টাকা আনার সুবিধা চালু করা হয়েছে। কোভিডের এই সময়ে ব্যাংক যখন সীমিত পরিসরে সেবা দিচ্ছে, তখন ‘নগদ’ ওয়ালেটে সহজেই টাকা আনার সেবাটি অনেক গ্রাহককে দৈনন্দিন আর্থিক সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বস্তি দিয়েছে। দেশে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের গ্রাহকেরা যাতে ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনার সুবিধা পেতে পারেন, সে জন্য কাজ করছি আমরা।
‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত লিমিট প্রযোজ্য হবে। করোনা সংক্রমণের এই সময়ে ঘরে বসেই ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা এনে গ্রাহকেরা সহজেই সেন্ড মানি, মোবাইল রিচার্জ, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, অনলাইনে পণ্য কেনা বা মার্চেন্ট পেমেন্ট করা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুদান দেওয়া, স্কুল কলেজের বেতন পরিশোধ করা, বিভিন্ন অনলাইন নিবন্ধনের ফি পরিশোধ এবং কোভিড টেস্টের ফি দেওয়াসহ অসংখ্য সেবা সহজেই নিতে পারবেন। ‘নগদ’-এর এমন সেবার কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমছে।
তাছাড়া জরুরি প্রয়োজনে দেশজুড়ে ‘নগদ’-এর দুই লাখের বেশি উদ্যোক্তা পয়েন্টে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রয়োজনে দেশের সর্বনিম্ন খরচে ক্যাশ-আউটও করতে পারছেন গ্রাহক। পাশাপাশি ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনার পর সেটি সেন্ড মানি করতেও গ্রাহককে বাড়তি কোনো খরচ করতে হচ্ছে না।
ব্যাংক থেকে ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনার প্রক্রিয়া
‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনতে প্রথমে বেনিফিসিয়ারি অ্যাকাউন্টটি যোগ করতে হবে। এ জন্য ‘নগদ’ অ্যাপের অ্যাড মানি আইকনে ঢুকতে হবে। এরপর ব্যাংক টু ‘নগদ’ অপশনটিতে গিয়ে ব্যাংকের নাম যুক্ত করতে হবে। ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং পোর্টাল (অ্যাপ অথবা ওয়েব) অপশনটি দেখালে অ্যাড বেনিফিসিয়ারি অথবা ম্যানেজ বেনিফিসিয়ারি আন্ডার ফান্ড ট্রান্সফার অথবা ট্রান্সফার টু ‘নগদ’ লেখাটি দেখাবে। তখন গ্রাহক যে ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা নিতে চান, সেই নম্বর যোগ করবেন। একটি ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা আনতে একবারই বেনিফিসিয়ারি ওয়ালেট নম্বর যোগ করতে হয়।
বেনিফিসিয়ারি অ্যাকাউন্ট যোগ করা হলে টাকা আনা যাবে সহজেই। টাকা আনার প্রক্রিয়াটিও বেনিফিসিয়ারি অ্যাকাউন্ট যোগ করার মতোই সহজ। অ্যাপে
বেনিফিসিয়ারি নম্বরটি সিলেক্ট করার পর ব্যাংক ডেবিট অথবা ফ্রম অ্যাকাউন্ট অপশন দেখাবে; সেখানে গ্রাহক তার সুবিধা মতো অপশন বেছে নিয়ে টাকার পরিমাণ লিখবেন এবং গ্রাহক একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাবেন। ওটিপি কনফার্ম করার সঙ্গে সঙ্গে ট্রান্সফার সফল হওয়ার এসএমএস নোটিফিকেশন পাবেন গ্রাহক। এর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ‘নগদ’ ওয়ালেটে টাকা যোগ করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।