বাংলাদেশে ফলেছে জাপানের সবচেয়ে দামি আম ‘সূর্যডিম’ বা এগ অব সান। আন্তর্জাতিকভাবে এটি ‘রেড ম্যাঙ্গো’ নামে পরিচিত হলেও এর জাপানি নাম ‘মিয়াজাকি’। এই আম ফলনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সচিবালয়ে শাক-সবজি ও ফল রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে করণীয় নিয়ে পর্যালোচনা সভার শুরুতে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক এ কথা জানান।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আম খেয়ে প্রশংসা করেছেন জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা একটি আম উৎপাদন করেন যান নাম সূর্যডিম, অর্থাৎ এগ অব সান। তাদের দেশীয় নাম মিয়াজাকি। একটা আমের দাম ছয় হাজার টাকা। তারা ব্রিটিশ রানি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের এই আম উপহার দেয়। খুবই নামকরা।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে এই আম রেড ম্যাঙ্গো নামে পরিচিত। সেই জাতও আমরা বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি। প্রায় ২০টি সেন্টারে গাছ লাগানো হয়েছে, উৎপাদন হয়েছে। গত বুধবার আমি চারটি আম আসাদ গেইট থেকে সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য দিয়েছি। কারণ উনি সর্বোচ্চ, উনার দেখা দরকার বাংলাদেশের সম্ভাবনাগুলো কোথায়।’
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় আমাদের আম যাওয়া শুরু হয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জাপানিদের সহযোগিতায় একটি ট্রিটমেন্ট প্রোজেক্ট এনেছেন। আমরাও একটি প্রোজেক্ট দিয়েছি। এটা করলে অনেক বেশি দামে আম রফতানি করা যাবে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘শাক-সবজি, ফলমূল রফতানি করার অপার সুযোগ আমাদের রয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশগুলোতে যেসব সবজি যাচ্ছে তার বেশিরভাগ ভোক্তা প্রবাসী বাঙালিরা। শুধু বাঙালি মার্কেটে নয়, যারা মাইগ্রেন্ট তাদের মার্কেটে নয়, ইউরোপীয়রা যেখানে কেনাকাটা করে, তাদের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সেসব জায়গায় আমরা কীভাবে নিতে পারি?’
গত অর্থবছর কৃষিখাতে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার রফতানি হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে ১৬৪ মিলিয়ন ডলারের শাকসবজি রফতানি করা হয়েছে। এবার এটা অনেক বেশি হবে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ১৮৮ মিলিয়ন ডলারের শাকসবজি রফতানি হয়েছে। শাকসবজি রফতানি আরও বাড়াতে চাই।’
‘সব রফতানিকারককে ডেকেছি। কী সুযোগ-সুবিধা তাদের দিতে পারি, কী ধরনের বাধা বিপত্তি আছে সেসব দূর করে দিতে চাই। একটা ডেস্ক করছি। সেখান থেকে আমরা তাদের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যাব। ব্যাংকে যাব। কার্গো একটা বিরাট সমস্যা। বিদেশি এয়ারলাইন্সের বাধ্যবাধকতা ছিল ২০ শতাংশ বাংলাদেশের কন্টেইনার শাকসবজি নিতে হবে, সেটা এখন তারা নেয় না। এটাকে আবার আমরা আরোপ করতে চাই। বাংলাদেশে ফ্লাইট চালাতে হলে ২০ শতাংশ কৃষিপণ্য কার্গোতে বহন করতে হবে। ব্যাংক ঋণ দিতে চায় না কৃষিতে, সেক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা করবো।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘মাঠ থেকে বিমানে ওঠা পর্যন্ত প্রত্যেক পয়েন্টে কৃষিপণ্যকে মনিটর করতে হবে। যাতে কোনো রকম রোগ-জীবাণু শরীরের জন্য ক্ষতিকারক কোনো ধাতু আছে কি-না। এসব পরীক্ষা করে দেখতে হবে। জয়দেবপুরে একটি ল্যাব করেছি। প্রধানমন্ত্রী পূর্বাচলে দুই একর জমি দিয়েছেন, সেখানে অ্যাগ্রো প্রসেসিং ল্যাবরেটরি হবে।’
অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন সংস্থা প্রধান এবং শাকসবজি ও ফল রফতানিকারকরা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
সানবিডি/এএ