ব্লু-ইকোনমি বাস্তবায়নে সরকারের পাঁচ নির্দেশ
প্রকাশ: ২০১৬-০১-১৫ ২২:০০:১১
ব্লু-ইকোনমি বিষয়ে নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা দ্রুত পাঠাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব। একই সঙ্গে সমুদ্রসীমা এলাকায় সমন্বিত সার্ভে ও তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পর্কে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও ব্যবস্থাপনায় উল্লিখিত নির্দেশসহ পাঁচ দফা নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সম্প্র্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বৈঠক থেকে এ নির্দেশ দেয়া হয়। ওই বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বৈঠকের কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, অপর তিনটি নির্দেশের মধ্যে সমুদ্র সম্পদ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়, প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক কোর্স শুরু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। এক্ষেত্রে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিবের সঙ্গে পরামর্শ করে পরিবেশ ও বন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, কৃষি এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া অর্জিত সমুদ্রসীমায় নিরাপত্তা রক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জিএসবি, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি সমন্বয়ে পৃথক সভা করার কথা বলা হয়। একইসঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে ‘সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সমন্বয় কমিটিতে কো-অপ্ট করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, ইতিপূর্বে সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করতে ২০১৪ সালের ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে ১৮টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানতে ২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, ব্লু-ইকোনোমির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো নিজস্ব পরিকল্পনা প্রেরণ করতে বিলম্ব করে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে সমুদ্রের কোন কোন এলাকায় কি কি খনিজসম্পদ, মূল্যবান অন্যান্য সম্পদ সম্পর্কে দ্রুত সার্ভে লক্ষ্যে নিজস্ব জাহাজের পাশাপাশি ভাড়ায় জাহাজ সংগ্রহের পদক্ষেপ নেয়া।
এছাড়া সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও আহরণের জন্য গবেষণা কার্যক্রম জোরদার, সমুদ্র ও নদীর মোহনা জেগে উঠা নতুন চর স্থায়ীর লক্ষ্যে বনায়ন কার্যক্রম জোরদার, সমুদ্রের কাছে দূরত্বে জেগে উঠা চরসূমহের ভূমি পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে একত্রীকরণ, সন্দ্বীপ ক্রস ড্যাম নির্মাণ করা যাবে কিনা এবং ক্রস ড্যাম নির্মাণ করলে ভোলা জেলায় এর কোনো প্রভাব পড়বে কিনা সে বিষয়ে স্টাডির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত-শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপ চারটি দেশের সমন্বয়ে সি ক্রুজের, কোস্টার ট্যুরিজমের ব্যবস্থা গ্রহণ, সমুদ্রসীমার তেল, গ্যাস, মূল্যবান খনিজসম্পদ, মৎস্য সম্পদ আহরণ, সমুদ্র বন্দর থেকে গ্যাস আহরণের সময় প্রকৃতি ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা, গভীর ও অগভীর সমুদ্রের তেল-গ্যাস ব্লকসমূহ দেয়ার ক্ষেত্রে জনগণের কল্যাণ ও জনগণের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া, সমুদ্রসীমায় বিদেশি ট্রলার, জাহাজের অননুমোদিত ফিশিং এবং অবৈধ ট্রলার, জাহাজের অনুপ্রবেশ রোধে মনিটরিং ও সার্ভেল্যান্স কার্যক্রম জোরদার, কক্সবাজার থেকে সমুদ্রতীর হয়ে পতেঙ্গা পর্যন্ত যাতায়াতের লক্ষ্যে সড়ক নির্মাণের বিষয়ে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করা, নদীশাসন ও নদী ড্রেজিং করে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনা, নতুন সমুদ্রসীমা অর্জনের পরিপ্রেক্ষিতে আইন, বিধি এবং প্রটোকলে কি পরিবর্তন করতে হবে তা লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ পরীক্ষা করে পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।