দীর্ঘ দিনের দাবি সত্ত্বেও ধান বীজ সংগ্রহের মূল্য বাড়ায়নি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। এ অবস্থায় চুক্তিবদ্ধ তিন শতাধিক চাষি গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসিতে ধান বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন।
চাষিরা জানান, বর্তমানে বিএডিসি তাদের কাছ থেকে ৪৫ টাকায় প্রতি কেজি ধান বীজ সংগ্রহ করে। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার পাশাপাশি আনুষঙ্গিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে কেজি প্রতি বীজ উৎপাদনের খরচ পড়ছে ৪৫ টাকার বেশি। এ পরিস্থিতিতে সংগ্রহ মূল্য বাড়ানোর জন্য তারা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসলেও, কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি।
তারা জানান, সাধারণত প্রতি কেজি ধান থেকে বাছন প্রক্রিয়া শেষে ৭০০ গ্রাম বীজ পাওয়া যায়। তবে, বিএডিসির শর্ত অনুযায়ী এক কেজি বীজ তৈরির জন্য অন্তত দেড় কেজি ধান বাছন প্রক্রিয়ায় আনতে হয়। প্রতি কেজি ধানের বর্তমান বাজার মূল্য অন্তত ২৫ টাকা। তাই বীজ উৎপাদনের শুরুতেই কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
এ বিষয়ে বিএডিসি'র চুক্তিবদ্ধ চাষি সমিতির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি এনামুল হক লোটাস জানান, বাজারে তাদের উৎপাদিত প্রতি কেজি বীজের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
এই কৃষকনেতার অভিযোগ, একদিকে বিএডিসি'র সংগ্রহ মূল্য কম। তার ওপর আছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। অনেক কর্মকর্তা কৃষকদের হয়রানি পর্যন্ত করেন। এ ছাড়া, বীজ সরবরাহের অন্তত ৫-৬ মাস পর মূল্য পরিশোধ করার কারণে কৃষকরা অন্যভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় চাষীদের বক্তব্য, এর আগে একাধিকবার তারা বিষয়গুলো বিএডিসি'র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানিয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সংগ্রহ মূল্য বাড়ানোর দাবিতে বিএডিসি কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছেন।
চাষি সমিতির সভাপতি এনামুল হক লোটাস এ ব্যাপারে বলেন, ‘মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে বিএডিসি চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এর অনুলিপি দেওয়া হয় কৃষিমন্ত্রী ও সচিবকেও। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার থেকে আমরা বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির যুগ্ম-পরিচালক সেলিম হায়দার বলেন, ‘চুক্তিবদ্ধ চাষিদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আমরা এখন পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।’
সানবিডি/এএ