মহামারির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তিন মাস পরপর বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন হওয়া উচিত বলে মনে করে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)।
শনিবার (৫ জুন) ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় এমসিসিআই।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এমসিসিআই সভাপতি ব্যরিস্টার নিহাত কবির বলেন, মহামারির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের অনুমান এখনো অনিশ্চিত। সুতরাং তিন মাস পর বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন হওয়া প্রয়োজন এবং পরবর্তী বছরে প্রতি তিন মাস পরপর অন্তর্বতী মূল্যায়ন হওয়া উচিত। যদি প্রয়োজন হয়, এটি পুনর্গঠন এবং সেই অনুযায়ী সংশোধন করা যায়। যেহেতু এই মহামারির প্রভাবের কারণে সমাজ ও অর্থনীতিতে সামনে আরও অনেক অজানা বিষয় মোকাবিলা করতে হবে, সেহেতু সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনায় সেই বিষয়গুলো মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় নমনীয়তাও থাকতে হবে।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ১০ শতাংশ কর পরিশোধের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার জন্য সুযোগ না থাকায় এমসিসিআই সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এমসিসিআই প্রত্যাশা করছে যে, সরকার আরও সুনির্দিষ্ট উপায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য তাদের কৌশলগুলো নিয়ে পুনর্বিবেচনা করবে, যাতে মহামারির সময়ে যারা চাকরি হারিয়েছিল তারা শিগগিরই চাকরির বাজারে ফিরে আসতে পারে।
এমসিসিআই মনে করে, এবারের বাজেট গতানুগতিক নয়। এতে ঘাটতি ও নিম্ন প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে চিন্তা না করে যুক্তিসঙ্গতভাবে জনগণের স্থিতিশীল জীবন ও জীবিকার দিকে মনোযোগ দেওয়ার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এই বাজেট অনেক দিক থেকে সাহসী ও অগ্রগামী। প্রস্তাবিত বাজেট বরাদ্দের আর্থিক ও অন্যান্য প্রণোদনার পুরো সুবিধা যদি অর্জন করতে হয়, তাহলে সঠিকভাবে বাজেট বাস্তবায়ন ও সরকারি ব্যয়ের মান নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া তিন মাস পরে বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন হওয়া উচিত। তখন যদি প্রয়োজন হয়, তবে বাজেট পুনর্গঠন ও সংশোধন করতে হবে।
শীর্ষ এই ব্যবসায়ী সংগঠন বাজেটে করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাবকে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে একটি সঠিক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে। বাজেটে অগ্রিম মূল্য সংযোজন কর কমানোর পরিকল্পনাকে ব্যবসাবান্ধব বলে মনে করে এমসিসিআই। এজন্য সরকারের প্রশংসা করেছে সংগঠনটি।
বাজেটে সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে জোর দেওয়ায় সরকারের প্রশংসা করেছে এমসিসিআই। সেই সঙ্গে জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পাঁচটি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্যও সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তারা। তবে এমসিসিআই মনে করে, ব্যক্তিগত কর রেয়াতের জন্য সর্বাধিক বিনিয়োগের সীমা দেড় কোটি থেকে এক কোটি টাকা করায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এমসিসিআই বলছে, নারী পরিচালিত এসএমই'র ক্ষেত্রে বর্তমানের ৫০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ লাখ বার্ষিক টার্নওভারের জন্য কর কমানো হয়েছে, যার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনীতির পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে সঠিক পদক্ষেপ বলে এমসিসিআই মনে করে। এছাড়াও নারী নেতৃত্বাধীন কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প এই বিধানের সম্পূর্ণ সুবিধা উপভোগ করতে এবং তাদের ব্যবসার আকার বাড়ানোর জন্য অর্থের উৎস নিশ্চিত করতে হবে।
সানবিডি/এএ