২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সার্বিক দিক বিবেচনায় পুঁজিবাজারবান্ধব বলে মনে করে চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (সিএসই)। তবে পুঁজিবাজারকে আরও গতিশীল এবং বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে আটটি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার (৫ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে গতিশীল ও উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে নানাবিধ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সার্বিক পুঁজিবাজারের উন্নয়নে অনেকগুলো বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে এ বাজেটে। সার্বিক দিক বিবেচনায় এবারের প্রস্তাবিত বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব। তবে পুঁজিবাজারকে আরও গতিশীল এবং বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাজেটে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের লেনদেনের ওপর বিদ্যমান উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার আবেদন পুনরায় বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার আড়াই শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা, জনস্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত বিশেষায়িত জাতীয় প্রতিষ্ঠান ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে এক্সচেঞ্জের প্রযোজ্য কর্পোরেট করহার ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রির কথা বিভিন্ন সময়ে বলা হলেও ঘোষিত বাজেটে এর কোনো পরিকল্পনা পরিলক্ষিত হয়নি। অর্থায়নের উৎস হিসেবে শেয়ার অব লোড করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। এছাড়াও ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য ১০ শতাংশ কর পরিশোধ করে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সময়সীমা এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত রয়েছে। ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যার সময়সীমা ঘোষিত বাজেটে বাড়ানো হয়নি। সিএসই বিদ্যমান আইনের এ সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন জানায়।
আসিফ ইব্রাহিম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এসএমই বোর্ডের মাধ্যমে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করছে। সিএসই তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানির জন্য ১০ শতাংশ হারে ৫ বছরের জন্য কর নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছিল। এতে অধিক সংখ্যক কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হবে। বর্তমানে শুধুমাত্র জিরো কুপন বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতিরেকে করমুক্ত। দেশের অর্থনীতির আকার এবং ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট তৈরি অতি জরুরি। এই পদক্ষেপ পুঁজিবাজারের পাশাপাশি আর্থিক খাতেও শৃঙ্খলা আনতে হবে। এ কারণে নতুনভাবে একটি বন্ড মার্কেট তৈরি করার লক্ষ্যে সব ধরনের বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়কে করমুক্ত করা প্রয়োজন এবং জিরো কুপন বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়ের করমুক্ত সুবিধা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব করদাতাকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, লভ্যাংশ প্রদানের সময় কোম্পানি তার মুনাফার উপর কর প্রদান করে, পুনরায় লভ্যাংশ বিতরণের সময় কর কর্তনের জন্য দ্বৈত করের সৃষ্টি হয়। লভ্যাংশ আয়ের উপর এ দ্বৈত কর নীতি পরিহার করা যেতে পারে। সেই লক্ষ্যে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
সানবিডি/এএ