বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নতুন দরিদ্রদের বিষয়ে বাজেটে কোনো ধরনের হিসাবের কথা উল্লেখ করা হয়নি। যেহেতু নতুন দরিদ্র মানুষের পরিসংখ্যান নিয়ে কোনো নির্দেশনা নেই, সেহেতু নীতিগতভাবে বাজেটে তাদের জন্য কিছু রয়েছে বলে আমরা মনে করি না।
রোববার (৬ জুন) ‘প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ : পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কি আছে’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক এবং সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
মূল উপস্থাপনায় ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘মহামারিতে নতুন করে দরিদ্র হওয়া জনগোষ্ঠীর জন্য করণীয় সম্পর্কে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু বলা হয়নি। এমনকি দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য প্রকৃত অর্থে বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। তাহলে প্রশ্ন জাগে প্রস্তাবিত বাজেটে দারিদ্র্য বিমোচনে কতটুকু অর্থ বরাদ্দ দিল সরকার? প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে- দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারে যে ব্যয় করবে তা জিডিপির ১০.৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১০ শতাংশ। তবে আমাদের পর্যালোচনা মতে, দারিদ্র্য বিমোচনে প্রকৃত অর্থে সরকারের ব্যয় বাড়বে না। তাহলে কিভাবে নতুন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হলো?’
তিনি তার উপস্থাপনায় বলেন, ‘দেশে ন্যূনতম দারিদ্রসীমা ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যা ৩৫ থেকে ৪৩ শতাংশের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বাস্থ্য, শ্রম, গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, নারী ও শিশু অধিদফতর, সেতু বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যয়কেও দারিদ্র বিমোচনের অংশ হিসেবে ধরা হয়েছে। সরকারকে এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে। কীভাবে এসব খাতের ব্যয়কে প্রত্যক্ষ দারিদ্র্য বিমোচনের আওতায় আসবে সে বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কর্মসংস্থানের হিসাবে দেশের ৫০ শতাংশ যুবক। এসব জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই। প্রস্তাবিত বাজেটের এক জায়গায় বলা হয়েছে- প্রযুক্তি খাতে ১০ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে অথচ আমরা জানতে পারলাম না। এ তথ্য কোথা থেকে এলো তার উৎস সম্পর্কে বলা নেই।’
সিপিডির ফেলো ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে সবার আগে যথাযথ তথ্য-উপাত্ত জরুরি, যা বাজেটে নেই। যদি এটার পরিমাপ করতেই না পারি তাহলে বাস্তবায়ন কিভাবে করবো? তবে বাজেটে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ছাড় যথেষ্ট নয়।’
সানবিডি/এএ