বেশ কিছু দিন ধরে বীমা নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ‘আইডিআরএ’ বীমা খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছিল এবার বুঝি বীমা খাতে সুদিন আসবে। সংস্থাটির নানাবিদ পদক্ষেপ দেখে আশা জাগিয়েছে বীমা শিল্পকে নিয়ে।
প্রথমত যে পদক্ষেপ নিয়েছিল সংস্থাটি তা হল কমিশন বন্ধ করা। লাইফ এবং নন-লাইফ উভয় সেক্টরেই বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। আমাদের দেশে বীমা শিল্প মানেই কমিশন বাণিজ্য এমনটি অনেকে মনে করে থাকেন। দীর্ঘ দিন ধরে এই কমিশন প্রথা চলে আসছে।
কমিশন নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে। কে কত বেশি কমিশন দিতে পারবে গ্রাহককে এই নিয়ে দরকষাকষির হয়ে থাকে। কিছু কিছু গ্রাহক কমিশনের আশায় নিজের সম্পদ রক্ষা করার কথাও ভুলে যান। নিদিষ্ট পরিমান প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে সম্পদের ঝুকি গ্রহন করে থাকে বীমা কোম্পানিগুলো।
সেই প্রিমিয়াম থেকে আবার গ্রাহককে কমিশন দিতে হয় একটা নির্দিষ্ট সংখ্যায়। এই প্রথা চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। বর্তমানে ‘আইডিআরএ’ কমিশন বন্ধের জোরালো ভূমিকা নিয়েছে। কিন্তু নানামুখী পদক্ষেপের পরও কমিশন প্রথা বন্ধ করা যাচ্ছে না। সবচেয়ে আশ্চার্য্য বিষয় যেটি তা হল একজন বীমা এজেন্টের নিকট একজন ব্যাংক কর্মকর্তা তার মেয়ের বিয়ের খরচ দাবী করে বসলেন! কারণ হিসেবে জিজ্ঞাসা করলাম কেন? বীমা এজেন্টের সোজা উত্তর কমিশন বন্ধ তাই। এটাতো একটি ঘটনা বললাম এরকম অনেক ঘটনা ঘটছে এই শিল্পে।
এত কিছুর পরও আইডিআরএ সংস্থাটি কমিশন কিছুতেই বন্ধ করতে পারছেনা। তবে এই খাতে শৃঙ্খলা আনতে হলে বীমা কোম্পানিগুলোকে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। এখানেও সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। কিছু কোম্পানি কমিশন প্রদানের পক্ষে আবার কিছু এর বিপক্ষে, মূল সমস্যা হল এখানেই।
একই সেক্টরে দ্বিমত থাকলেতো কোনভাবেই শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না। এখনও সংস্থাটির নির্দেশনা অমান্য করে কমিশন প্রদান করে যাচ্ছে নানা রকম ফর্মুলা প্রয়োগ করে। যার কারনে বীমা শিল্পে শৃঙ্খলা ফেরানোর সম্ভাবনা ক্ষৃন।
লেখক: ডেপুটি ম্যানেজার (অবলিখন), ইষ্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।