ব্যবসায়ী, আইনজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, গৃহিণী সব পেশার মানুষই প্রাত্যহিক জীবনে শারীরিক এবং মানসিক চাপে ভুগে থাকেন। চাপমুক্ত হতে আমরা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি। গতানুগতিক পদ্ধতি বাদ দিয়ে চাপ কমানোর নতুন পদ্ধতি ‘আর্ট বা চারু ও কারু কলা থেরাপি’ প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। এটি শুধু আপনার চাপ দূর করবে না, মানসিক প্রশান্তিও দেবে।
মনোরোগ থেরাপিস্ট এবং পরামর্শক কুঞ্জল শাহ বলেন, আমাদের বেশিরভাগ সমস্যা বুদ্ধিবৃত্তিক নয় বরং জটিল আবেগীয় ও আন্তঃদ্বান্দ্বিক সমস্যা। আর্ট থেরাপি সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে। এটি প্রধানত লুকানো সমস্যাগুলো উন্মোচিত করে, মানসিক কষ্ট কমায়, নিজেকে প্রকাশ করতে সহায়তা করে এবং স্বাচ্ছন্দ্য দেয়।
চিরাচরিত চিত্রকর্মের পাশাপাশি বর্তমানে আর্ট বা শিল্পকর্মের অনেকগুলো মাধ্যম চালু হয়েছে। যেমন, জেন্তাগল, ডুডুল, মানডালাস, ওয়ারলি, মধুবানী, পাত্তাচিত্রা ইত্যাদি। এসব আর্ট আমাদের মস্তিষ্ককে প্রশিক্ষিত করে বর্তমান নিয়ে বাঁচতে সহায়তা করে। নতুন এই পদ্ধতি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের আবেগীয় উত্থান-পতন মোকাবেলা করতে সহায়তা করে।
এই বিষয়টি প্রমাণিত জ্যামিতিক আকার এবং নমুনা মানসিক উদ্বেগ থেকে রক্ষা করে। যখনি আপনি আঁকবেন ও রঙ করবেন মনে হবে ধ্যানের মধ্যে আছেন। কারণ এই সময় মন ও শরীর একই সঙ্গে কাজ করে নতুন কিছু সৃষ্টিতে।
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও একজন স্বশিক্ষিত শিল্পী দেবিকা এস একদিনের একটি মানডালা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, এই ওয়ার্কশপটি প্রাত্যহিক চাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাকে সহায়তা করেছিল। শিল্পকর্ম আমাকে যথেষ্ট আনন্দ প্রদান করেছে। কলেজে থাকা অবস্থায় আমি অনেক স্কেচ আঁকতাম। কিন্তু বিয়ের পর সন্তান, বাসার কাজকর্ম করতে গিয়ে কোনো সময় পেতাম না। ওয়ার্কশপটি করার পর আমি আমার আগের শখে ফিরে গিয়েছি। এখন আমি সপ্তাহে দুই দিন স্কেচ আঁকি। এই কাজটির কারণে আমি মানসিক সুস্থতা ফিরে পেয়েছি।
নির্ভয়ে আপনি ছবি আঁকতে ও রঙ করতে পারেন। সৃজনশীলতায় কোনো বাধা নেই। আর্ট থেরাপির জন্য আপনাকে কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে হবে না। আপনি যদি ছবি আঁকায় একদম নতুনও হন সমস্যা নেই। আপনি কল্পনা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইচ্ছামতো আঁকতে পারেন, রঙ করতে পারেন। যা আপনার মানসিক সমস্যা তাড়াতে সাহায্য করবে।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ