প্রসাধনী সামগ্রীসহ ৭৯টি আমদানি পণ্যের সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য (ট্যারিফ) মূল্য বৃদ্ধি করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। এরই মধ্যে ৪৬টি পণ্যের নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্যের ওপর ভিত্তি করে শুল্ক আদায় শুরু হয়েছে। অন্য ৩৩টি পণ্যের নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্য ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এসব পণ্যের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস ছাড়াও দেশের অন্যান্য কাস্টম হাউজ, কমিশনারেট এবং শুল্কস্টেশনেও এ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হচ্ছে।
কাস্টমস সূত্র জানা গেছে, ৫৪টি এইচএস কোডভুক্ত ৭৯টি পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রসাধনী সামগ্রী রয়েছে ৩৩টি। এছাড়া ১১টি ইলেকট্রনিক পণ্য, পাঁচটি খেলনা সামগ্রী, পাঁচটি আসবাব, চারটি খাদ্যপণ্যসহ ৪৬টি পণ্য রয়েছে। বডি স্প্রে, শ্যাম্পু, পাউডার, শেভিং ক্রিম, লিপস্টিকসহ মোট ৩৩টি পণ্য ২০ জানুয়ারি থেকে নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্যে পণ্য খালাস হবে।
এছাড়া গত ২২ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে ইলেকট্রনিক পণ্য, খেলনা সামগ্রী, খাদ্যপণ্যসহ মোট ৪৬টি পণ্য শুল্কায়ন। ৫৪টি এইচএস কোডভুক্ত পণ্যের ট্যারিফ মূল্য বাড়ানোর আগে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস প্রতিনিধিদের সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তাদের দুই দফা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার এহতেশামুল হক।
তথ্য অনুযায়ী, আমদানিকৃত বডি স্প্রে (প্রতি কেজি) সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য দেড় ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ২৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এশিয়া ছাড়া অন্য দেশ থেকে আমদানি করা হলে তা প্রতি কেজি সাড়ে ৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, হ্যান্ডওয়াশ, ফেসওয়াশসহ প্রভৃতি প্রতি কেজি পণ্যের সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ২ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ২০ ডলার করা হয়েছে।
এশিয়া ছাড়া অন্য দেশ থেকে আমদানি করা হলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৩ ডলারে। প্রতি কেজি ফেস ক্রিম দেড় ডলার থেকে বাড়িয়ে ন্যূনতম আড়াই ডলার, শেভিং ক্রিম প্রতি কেজি পৌনে ২ ডলার থেকে বাড়িয়ে আড়াই ডলার, এয়ার ফ্রেশনার ও কার এয়ার ফ্রেশনার প্রতি কেজি পৌনে ২ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ ডলার এবং পাউডার প্রতি কেজি ১ ডলার থেকে বাড়িয়ে ন্যূনতম ২ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে এসব পণ্য এশিয়া ছাড়া অন্য দেশ থেকে আমদানি করা হলে প্রতি কেজি ৩ থেকে ৫ ডলার পর্যন্ত সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করে শুল্কায়ন করা হবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার এহতেশামুল হক এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘৫৪টি এইচএস কোডভুক্ত ৭৯টি পণ্যের সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য আগের তুলনায় কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। আগে এসব পণ্যের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক কম ছিল। চট্টগ্রাম কাস্টমস, ব্যবসায়ী এবং সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি নতুন করে এসব পণ্যের সর্বনিম্ন শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই ধাপে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে।’
চিটাগং চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, ‘অধিকাংশ পণ্যেরই শুল্কমূল্য নির্ধারণ করা হয় প্রতি পিস বা কেজি হিসেবে। পণ্য ও ব্যান্ড ভিন্নতার কারণে দামেরও ভিন্নতা হয়। পণ্যের আধুনিক ডাটাবেজ না থাকায় কাস্টমস কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের আলোচনার ভিত্তিতে শুল্কমূল্য নির্ধারণ করা হয়। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে বেশকিছু পণ্যের সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এতে কাস্টমসের রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।’
সানবিডি/ঢাকা/বনিকবার্তা/এসএস