বর্ষায় সর্দি-কাশির প্রকোপ নিরাময়ে উপযোগী পেঁয়াজ!

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৬-২৫ ১২:৪২:১৫


আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বর্ষায় বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়। এ সময় আবহাওয়ার আর্দ্রতা ও স্যাঁতসেঁতে ভাবের কারণে অ্যালার্জিরা সক্রিয় হয়ে ওঠে।

তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমলেই ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া চড়াও হয়ে ওঠে। তাই বর্ষার মৌসুমে সর্দি-কাশির প্রকোপ থেকে নিজেদেরকে বাঁচাতে সচেতন থাকা জরুরি। পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া দাওয়াইয়ের উপর ভরসা রাখুন এ সময়।

প্রাকৃতিক অনেক ভেষজ আছে; যেগুলো ফ্লু’র থেকে বাঁচায়। তেমনই এক উপাদান হলো পেঁয়াজ। সবার রান্নাঘরেই এ উপাদানটি থাকে। শুধু নানা পদের স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়; বরং সুস্বাস্থ্যের পক্ষেও উপযোগী পেঁয়াজ। এমনকি নানা ধরণের অসুস্থতার সঙ্গে লড়তে পেঁয়াজ সাহায্য করে থাকে।

এর জন্য বেশি কিছু করতে হবে না। শুধু ঘুমানোর সময় বা বসে থাকলে মোজার মধ্যে পেঁয়াজের স্লাইস রেখে দিন। এর মাধ্যমেই আপনার শরীর নানা উপকার পাবে। লস এঞ্জেলেসের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক লরেন ফেডারও মোজার মধ্যে পেঁয়াজ রেখে ঘুমানোর বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছেন।

তার মতে, মোজার মধ্যে পেঁয়াজ রেখে রাতে ঘুমালে সর্দি, ব্লাডারে সংক্রমণ, কানে ব্যথা, দাঁতে ব্যথা ইত্যাদি কমানো যেতে পারে। চিনে পেঁয়াজকে দীর্ঘ দিন ধরে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। তাই একবার চেষ্টা করে দেখা যেতেই পারে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোজার মধ্যে আধা টুকরো পেঁয়াজ রেখে ঘুমান। এর ফলে আপনার পা-ও স্ক্রাব হবে।

ন্যাশনাল অনিয়ন অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৫০০ সালের শুরুর দিকে পেঁয়াজ নিয়ে বিভিন্ন ধারণার উদ্ভব ঘটে। তখন বিশ্বাস করা হত, বাড়ির চারপাশে কাঁচা পেঁয়াজ কেটে রেখে দিলে বুবোনিক প্লেগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ধারণা করা হত, বাড়ির চারপাশে পেঁয়াজ কেটে রাখলে বিষাক্ত বাতাস থেকে রক্ষা মিলবে।

মোজার মধ্যে পেঁয়াজ রাখার বিষয়টি চীনে প্রথম প্রচলন শুরু হয়। চীনা রিফ্লেক্সোলজির প্রাচীন ওষুধি অনুশীলনে এমনটিই করা হয়। পায়ের স্নায়ুগুলো সচল রাখার মাধ্যমে শারীরিক আরোগ্য লাভ করার চর্চা হাজার হাজার বছর পুরোনো।

জানা যায়, মোজা পরে তার মধ্যে পেঁয়াজ রাখলে শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়। পায়ে ৭০০০ স্নায়ু আছে। যা পুরো শরীরের সঙ্গে যুক্ত। তাই মোজার মধ্যে একটি পেঁয়াজ রেখে দিলেই শারীরিক নানা সমস্যার সমাধান মিলবে।

মোজা পরে তাতে পেঁয়াজ রেখে দিন, এটি পুরো শরীরকে পরিষ্কার করবে। শরীরের নানান ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু শোষণ করবে এই পেঁয়াজ। এ প্রক্রিয়ায় পেঁয়াজের সাহায্যে রক্তও পরিষ্কার করা সম্ভব হবে।

গরেবষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর সময় মোজায় পেঁয়াজ ঢুকিয়ে ঘুমালে সর্দির হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। পেঁয়াজে উপস্থিত নানা উপাদান সর্দি থেকে স্বস্তি দেয়।

পেঁয়াজ গন্ধ শুষে নিতে এবং বায়ুর গুণমান বৃদ্ধিতে সহায়ক। তবে কীটনাশক ও কেমিকেলের দিয়ে উৎপন্ন পেঁয়াজের পরিবর্তে অর্গ্যানিক পেঁয়াজ ব্যবহার করা উচিত।

এজন্য বায়োলজিক্যাল ও আনস্প্রেইড পেঁয়াজ ব্যবহার করা উচিত। তা না-করলে পেঁয়াজে থাকা রাসায়নিক উপাদানসমূহ পায়ের মাধ্যমে রক্তে প্রবেশ করে যাবে। ফলে হীতে বিপরীত হতে পারে।

গবেষকদের মতে, শরীরের ইমিউন সিস্টেমটি উন্নত করতে পেঁয়াজ অনেক কার্যকরী। এজন্য প্রতিদিদের খাদ্যতালিকায় পেঁয়াজ রাখা জরুরি। পেঁয়াজের ফ্ল্যাভোনয়েড ক্যান্সার এবং প্রদাহজনিত রোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।

এ ছাড়াও পেঁয়াজে থাকে ভিটামিন সি। যা ইমিউন ফাংশন উন্নত করে। ২০১০ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, পেঁয়াজ এবং রসুনে পাওয়া অর্গানসালফার যৌগগুলো নিয়মিত সেবনও হৃদরোগ সংক্রান্ত রোগের বিকাশকে প্রতিরোধ করতে পারে।